অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত এক নাম। আজ তার ৮৩তম জন্মবার্ষিকী। তিনি অশিক্ষা, কূপমণ্ডূকতা দূর করে মানুষের মনে শিক্ষা ও সংস্কৃতির বাতিঘর জ্বালাতে নিরন্তর সাধনা করে চলেছেন। সংকটের পথপ্রদর্শক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
দীর্ঘ ছয় দশক ধরে তিনি পথ দেখিয়েছেন। অন্ধকার সরিয়ে আলোর পথে ধাবিত হতে নির্দেশনা দিয়েছেন। মৌলবাদ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ক্লান্তিহীনভাবে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। এখনো পর্যন্ত তিনি সঠিক পথের চলার দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের ভাষাচর্চার ক্ষেত্রে, গদ্যবিকাশের পর্বে, ব্যাকরণ ও প্রকাশ পদ্ধতির ক্ষেত্রে তার অসামান্য গবেষণা আমাদের দিকনির্দেশক হয়ে উঠেছে। বাঙালির গৌরব, বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম অহংকার যে মুক্তিযুদ্ধ, সেখানেও তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তার গবেষণা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গবেষণাগ্রন্থ রচনার পাশাপাশি অনুবাদ ও সম্পাদনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কাজের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৮৫ সালে একুশে পদক পান এই মুক্তিযোদ্ধা। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মুজিবনগর সরকারের অংশ ছিলেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
আরও পড়ুন: খুলনার পাটকল: পাঁচ বছরে লোকসান ১৪০০ কোটি টাকা!
পুরস্কার ও সম্মাননা : জীবনে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, দাউদ পুরস্কার (১৯৬৫), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৮৫), আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৩), রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিলিট (২০০৫), এশিয়াটিক সোসাইটিতে (কলকাতা) ইন্দিরা গান্ধী স্মারক বক্তৃতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরত্চন্দ্র স্মারক বক্তৃতা, নেতাজি ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সে নেতাজি স্মারক বক্তৃতা, অনুষ্টুপের উদ্যোগে সমর সেন স্মারক বক্তৃতা, পদ্মভূষণ পদক (২০১৪) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
ইত্তেফাক/আরআই