শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দুই মেয়েকে খুন, বাবার মামলার পর গ্রেফতার মা

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২০, ১৫:১৮

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে দুই মেয়েকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন বাবা। মামলার পর পরই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। 

খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শনিবার রাতে মামলা করেন দুই মেয়ের বাবা মোজাম্মেল হক বিপ্লব। মামলায় দুই শিশু সন্তানের মা আখতারুন্নেসা পপিকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

এর আগে দক্ষিণ গোড়ানে একটি ফ্লাটে মা তার দুই শিশু সন্তানকে গলাকেটে হত্যা করেন। এরপর তিনি আগুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পপির শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। 

নিহত দুই মেয়ের নাম জান্নাত (১১) ও আলভি (৭)। তাদেরকে বটি ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত দুই শিশু রাজধানীর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

পপির স্বামী মোজাম্মেল হক বিপ্লব ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেয়ে দুটির লেখাপড়া করানোর জন্য দুই বছর যাবৎ পপি পরিবার নিয়ে ঐ ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। তবে তার স্বামী গ্রামে থাকতেন। ঘটনার সময় শুক্রবার রাতে পপির স্বামী বাসায় ছিলেন না। 

শনিবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে পপির বাবার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখতে পান ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে গলাকাটা অবস্থায় দুই সন্তান খাটে শুয়ে আছে এবং মেঝেতে লেপ-তোষক দিয়ে মুড়িয়ে শুয়ে আছেন অগ্নিদগ্ধ পপি। পরে পুলিশ এসে শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার ও অগ্নিদগ্ধ পপিকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে পপি কর্তব্যরত নার্সদের বলেন, গত রাতে (শুক্রবার) আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমন্ত দুই শিশু জান্নাত ও আলভীকে হত্যার পরিকল্পনা করি। প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে ও পরে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে তাদের হত্যা করি। 

মা হয়ে কেন এমন লোমহর্ষক হত্যার ঘটনা ঘটালেন জানতে চাইলে পপি বলেন, সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছিলাম না। সংসার চালানো যাচ্ছিল না। স্বামী সংসার খরচ দিতো মাত্র এক হাজার ১০০ টাকা। ঐ টাকায় কিছুই করা যাচ্ছিল না। এ নিয়ে হতাশা, বেঁচে থাকার নিরাশা থেকেই দুই সন্তানকে খুন ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।

ইত্তেফাক/জেডএইচ