গত বছরটা প্রকাশকরা অলস বসে কাটিয়েছেন। একটু বিত্তবান প্রকাশকরা কোনোভাবে টিকে গেলেও বেশির ভাগ প্রকাশকই ঋণ করে কর্মচারীর বেতন দিয়েছেন। জীবিকা নির্বাহ করেছেন। অধিকাংশ প্রকাশকই লেখকদের রয়্যালটি দিতে পারেননি। প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটিয়েছেন। তাই প্রকাশক ও লেখক—সবাই এবার ফেব্রুয়ারিতে বইমেলার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
বইমেলা নিয়ে আমরা দফায় দফায় প্রকাশক সমিতির সঙ্গে বাংলা একাডেমির বৈঠক করতে দেখেছি; কিন্তু বাংলা একাডেমি মেলা না করার ব্যাপারে শুরু থেকেই অনড় ছিল। অনেক দেনদরবারের পর প্রকাশক সমিতি তিনটি বিকল্প তারিখ প্রস্তাব করল। সেই তারিখগুলো ছিল ফেব্রুয়ারিকেন্দ্রিক। পরে আবার বলা হলো, মাসব্যাপী মেলার দরকার নেই। ফেব্রুয়ারির শেষের ১৫ দিন অথবা সাত দিনের মেলা করা হোক; কিন্তু বাংলা একাডেমি গোঁ ধরে বসেছিল।
যাহোক, বাংলা একাডেমি ঘোষণা করল, মেলা হবে মার্চ-এপ্রিলে। অনেক নেতিবাচক বিষয় এড়িয়ে তারপরও প্রকাশকরা বৈরি পরিবেশে বইমেলা করতে রাজি হলেন। সময় নির্ধারণ করা হলো ৩টা থেকে ৯টা। গরমের কারণে ৫টার আগে মানুষ বইমেলায় খুব একটা যায়নি। বেশির ভাগ মানুষ যায় সন্ধ্যার পর। অথচ এখন মেলার সময়সূচি হচ্ছে সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৬টা। এটা কোন বিবেচনায় করা হয়েছে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। বাংলা একাডেমির ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রকাশকরা।
ক্ষুব্ধ লেখক এবং পাঠকরাও। আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, এটা না করে বরং মেলা বন্ধ ঘোষণা করাই শ্রেয়। এখন বাংলা একাডেমিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে; তারা মেলা বন্ধ করবে নাকি সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করবে। তবে, আমার প্রস্তাব—মেলার সময়সূচি বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হোক।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
ইত্তেফাক/কেকে