বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সুদিনের প্রত্যাশায় শেষ হচ্ছে বইমেলা

আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২১, ০৩:১৩

এবারের করোনাকালের বইমেলা বাদ দিলে গত কয়েক বছরের বইমেলা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রযুক্তির বিকাশের কারণে বাংলাদেশে বই বিক্রি কিন্তু কমেনি। দিন দিন বই বিক্রি বাড়ছে। প্রতিবছর নতুন নতুন প্রকাশক আসছেন। এসব প্রমাণ করে বইয়ের বিক্রি বাড়ছে। 

বইয়ের চাহিদা রয়েছে। প্রকাশনার মানও দেশে আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তরুণদের বইবিমুখতার কথা খুব জোরেশোরে শোনা যায়। বইমেলায় কিন্তু মূল ক্রেতাই থাকে তরুণরা। এটা ঠিক যে, তরুণদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় থাকার প্রবণতা রয়েছে। তবে উলটো চিত্রও রয়েছে। কিছু কিছু তরুণ বেশ সিরিয়াসলি সাহিত্য পাঠ করছে, চর্চা করছে। উঠে আসছে তরুণ লেখকরা।

এবার বর্ষীয়ান লেখকরা বইমেলায় তেমন আসেননি। কিন্তু তরুণ লেখকদের পদচারণায় মুখর ছিল বইমেলা। মেলায় এসে পাঠকরা বললেন, এই মহামারির মধ্যে মেলা চালানো বড়ো ঝুঁকির বিষয় ছিল। তারপরেও কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই মেলা পুরো সময় পেরিয়ে এলো সেটাও বড় অর্জন।

বইমেলার আজ রবিবার (১২ এপ্রিল) শেষ দিন। অনেক আশা নিয়ে শুরু হওয়া বইমেলার শেষ হচ্ছে নিরাশার মধ্য দিয়ে। বইপ্রেমীরা আজই শেষবারের মতো যেতে পারবেন বই মেলায়, কিনবেন বই।

তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, মেলায় এবার বিক্রি কম। করোনার প্রভাবে এটা হয়েছে। এতে কাউকেই দায়ী করা যাবে না। সবারই ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি থাকবেই। মেলায় বই বিক্রি না হলেও সে বই নষ্ট হবে না। যে বই মেলা থেকে বিক্রি হয়নি সেটা অনলাইনে বিক্রি হবে। নয়তো পরের বছর বিক্রি হবে। এ নিয়ে হতাশ না হয়ে সামনের দিকে তাকাতে হবে।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, করোনার কারণে ফেব্রুয়ারির মেলা মার্চে শুরু হয়েছিল। এই সময়টা মেলার জন্য উপযোগী নয়। গরমের কারণে মেলায় অনেকেই আসেননি। এরপর থেকে একুশের বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই যেন করা হয। অন্য কোনো সময় নয়—এই দাবি জানালেন তিনি।

নতুন বই 
বইমেলার ২৫তম দিনে নতুন বই এসেছে ৪৭টি। এরমধ্যে রয়েছে গল্প-৪, উপন্যাস-৭, প্রবন্ধ-২, কবিতা-১৬, গবেষণা-১, ছড়া-২, বিজ্ঞান-১, ভ্রমণ-২, ইতিহাস-১, ধর্মীয়-৩, অনুবাদ-৩, অন্যান্য ৩টি বই। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অন্যপ্রকাশ এনেছে সামসাদ ফেরদৌসীর ‘এভলিন দ্বীপে একরাত’, রেডিয়ান এনেছে সাজিদ বিন সারোয়ারের ‘গোয়েন্দা বাবু’, কথাপ্রকাশ এনেছে অসিত বরণ ঘোষের ‘শিশু শিক্ষা প্রসঙ্গে যে কথা না জানলেই নয়’, আবুল কাশেম সম্পাদিত ‘মুক্তি সংগ্রামে আওয়ামী লীগ দালিলিক ইতিহাস ১৯৪৭-১৯৭১’, অভ্র এনেছে ইফফাত জাহান সাফার ‘মিন্নাতের ডায়েরী’, চর্চা এনেছে যুবক অনার্য অনূদিত ‘ভাঙনে শিল্পের ক্ষত’, পঙ্খিরাজ এনেছে খন্দকার মাহমুদুল হাসানের ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো’, আলোর ঠিকানা এনেছে সাজি আফরোজের ‘প্রেমের নেশা’, প্রিয় বাংলা এনেছে শরীফ আহমেদের ‘মত্স্যপুচ্ছ পর্বতের দেশে’, ইকবাল খন্দকারের ‘একজন গুপ্তঘাতক’, পাঠক সমাবেশ এনেছে ‘আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া অনূদিত ‘প্লেটোর চারটি সংলাপ’, ভাষাচিত্র এনেছে জাহাঙ্গীর আলম জুয়েলের ‘বাংলায় শিখি স্প্যানিশ ভাষা’, বিভাস এনেছে ইকবাল হাসান তপুর সম্পাদিত ‘বিচারপতি ওবায়দুল হাসান: ইতিহাসের পথ বেয়ে ঐতিহ্যময়’ প্রভৃতি।

ইত্তেফাক/এসজেড