সবাই যেমন প্রত্যাশা করেছিল তাই ঘটেছে। রেকর্ড পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে বইমেলায়। সুন্দর ছিমছাম পাঠকবান্ধব বইমেলা আয়োজনের কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। বই বিক্রির পরিমাণ দেখলেও বোঝা যাচ্ছে সেটা। মেলায় এবার ৩০ দিনে ৮০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছরের মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৭০ কোটি টাকার। ২০১৭ সালে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল।
আর নতুন বই প্রকাশের ক্ষেত্রে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার ৪ হাজার ৮৩৪টি নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে। আর বাংলা একাডেমির পর্যালোচনায় এসব বইয়ের মধ্য থেকে ১১৫১টি বইকে মানসম্পন্ন বই হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভালো বই প্রকাশিত হওয়া এবং মেলার সুন্দর ছিমছাম পরিবেশের কারণেই এই রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়েছে বলে মত দেন লেখক-প্রকাশক ও পাঠকরা। বিশাল পরিসরের মেলায় আগতদের মধ্যে স্বস্তি ছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল পরিসর, ধস্তাধস্তি না থাকার কারণেও মানুষ বইমেলায় এসেছে। স্বস্তিতে বই কিনবার পরিবেশ পেয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার বিস্তৃতি এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এবছর মেলার বিস্তৃতি বাড়িয়ে নান্দনিক বিন্যাসের কারণে ছিমছাম মেলা উপহার দিতে পেরেছে বাংলা একাডেমি। আগামীতে স্টল বিন্যাসকে আরো আধুনিক করে আরো সুন্দর ও দর্শনার্থীদের জন্য উপযোগী করার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো মাসব্যাপি এ বইমেলার।
শেষ সময়ে দুদিন মেলার সময় বাড়ানোতে প্রকাশকরা বেশ খুশি। তেমনি খুশি পাঠকরাও। এতে মেলার আনন্দ যেন আরও বেড়ে গিয়েছিল।
মেলায় এবার নিরাপত্তা কাজে বিভিন্ন বাহিনীর ১২শ’ সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় রেখেছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে এক মাস দুই দিনে ৮২৪টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে ৩ হাজারেরও বেশি লোক অংশ নেন। ৩০ দিনে ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে ৩১০ জন প্রবীণ, নবীন, তরুণ লেখক, প্রকাশক ও সাহিত্যিক তারা তাদের নতুন বই নিয়ে পাঠকের মুখোমুখি হন।
মেলা উপলক্ষে গঠিত টাস্কফোর্স মেলায় অভিযান পরিচালনা করে ২২টি প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান নোটিসের জবাব না দেয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের স্টলটি একদিন বন্ধ রাখার শাস্তি প্রদান করা হয়।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, এবার মেলা ছিল অসাধারণ। মেলার মূল থিম ‘বিজয় ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ : নবপর্যায় ’কে কেন্দ্র করে মেলা ছিল নান্দনিকতায় ভরপুর। স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মেলার পরিবেশ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে নান্দনিক ও শোভিত। অন্যান্য সব ব্যবস্থা ছিল লক্ষ্যণীয়। নতুন নতুন আয়োজনও ছিল। সব মিলে এবারের মেলা সফলভাবে শেষ হলো বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ইত্তেফাক/আরকেজি