করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে ‘অঘোষিত’ লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। লোকজনের ভিড় ঠেকাতে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যরা কঠোরভাবে পাহারা দিচ্ছেন, তল্লাশি করছেন। তবে অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর দয়াগঞ্জ মোড়, যাত্রাবাড়ী, ধোলাই পাড়, জুরাইন, মতিঝিল, শাহবাগ, নীলক্ষেত, কাওরান বাজারসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
এর আগে বুধবার রাতে হাতিরঝিল এলাকায় সাধারণ পথচারী ও ঘরে ফেরা মানুষকে নাজেহাল করেছেন পুলিশ সদস্যরা। দায়িত্ব পালন শেষে রাতে সাংবাদিকদেরও বাড়ি ফেরার সময় কেন মাস্ক মুখে পরা নেই, এত রাতে কেন বের হলেন? এমন সব প্রশ্নের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন পুলিশ সদস্যরা। বিনা কারণে অনেক পথচারীকে কান ধরে উঠবস করাতেও দেখা গেছে। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে।
পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে আমাদের। কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা যাবে না। তারপরও কয়েকটি ঘটনার খবর আমরা পেয়েছি, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ মোড়ে চারদিকে পুলিশ ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। সহজে কোনো গাড়ি ব্যারিকেড পার হয়ে যেতে পারছে না। রিকশা চলাচলের জন্য রাস্তা রাখা হয়েছে। শুধু জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ছাড় পাচ্ছেন না। দেখা গেল একজন মোটরসাইকেল আরোহী এলে তাকে আটকে দেয় পুলিশ। জানতে চায়, তিনি কোথায় যাবেন? কেন বের হয়েছেন? লোকটি জানালেন, এমনি বের হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের এক সদস্য তাকে লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করলেন। লোকটিও সরি বলে ফিরে চলে গেলেন। আরেক জন বয়স্ক লোক বাজার নিয়ে আসছিলেন কিন্তু মুখে মাস্ক নেই। এজন্য তাকেও আটকে দেয় পুলিশ।
আরো পড়ুন: করোনা ভাইরাস নিয়ে যত প্রশ্ন
মতিঝিলের আরামবাগ এলাকায় দেখা যায়, কয়েক জন লোককে আটকে পুলিশ জেরা করছেন। তারা কেন বাইরে বের হয়েছেন, কোথায় যাচ্ছেন, মুখে মাস্ক নেই কেন এসব জিগ্যেস করছে পুলিশ। এতে অনেকে ‘সরি’ বলে আর বের হবেন না বলে চলে যাচ্ছেন। আবার অনেককে কঠোর ভাষায় সাবধান করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে অনেক মহল্লায় মুদি দোকানে গিয়েও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ। যদিও সরকারি নির্দেশনায় এগুলো বন্ধ করতে বলা হয়নি। তারপরও পুলিশের বাড়াবাড়ির কারণে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে পত্রিকা অফিসে ফোন করে জানিয়েছেন।
ইত্তেফাক/এমআর