সোমবার সদরঘাটে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড ডুবির ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। অপর দিকে ময়ূর-২-এর মাস্টার এবং ড্রাইভার পলাতক রয়েছেন। এমনকি ঘটনার পর থেকে পালিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত লঞ্চের মালিকও।
বিআইডব্লিউটিএ গঠিত কমিটির এক সদস্য জানান, তারা ময়ূর-২ লঞ্চ মালিকের কোনো বক্তব্য পাননি। তবে তার প্রতিষ্ঠান সি হর্স করপোরেশনের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ময়ূর-২ লঞ্চের কেরানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এদিকে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি মর্নিং বার্ড লঞ্চের বেঁচে যাওয়া ১১ যাত্রীসহ প্রত্যক্ষদর্শী ২৫ জনের বক্তব্য নিয়েছে।
এর আগে ২৯ জুন দুর্ঘটনার পর পরই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। ওই কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে শনাক্ত এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দেওয়ার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী সোমবার (৬ জুলাই ) প্রকাশ করা হবে তদন্ত প্রতিবেদন।
তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, লঞ্চ দুঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের কাছে বলেছে যে, ময়ূর-২ লঞ্চটি হঠাৎ করেই মর্নিং বার্ড লঞ্চের দিকে চেপে আসছিল। প্রথমে পেছনে বেপরোয়াভাবে ধাক্কা দিলে লঞ্চের ভেতরে সবাই ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। এর মাত্র ৬ সেকেন্ডের মাথায় আরেক ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়।
এদিকে মেসার্স সি হর্স করপোরেশনের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তদন্ত কমিটির সদস্যদের জানিয়েছেন, লঞ্চের মাস্টার ও ড্রাইভারের অদক্ষতা এবং অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ময়ূর-২ লঞ্চের কেরানি সেলিম কমিটিকে জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে তিনি লঞ্চে ছিলেন না। এ কারণে দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, কে লঞ্চ চালিয়েছে তা তিনি জানেন না।
আরো পড়ুন : করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট
ডুবে যাওয়া মর্নিং বার্ড লঞ্চের নিচের ডেকে ছিলেন যাত্রী আব্দুর রউফ। তিনি ২০ বছর ধরে সকাল বিকাল মুন্সিগঞ্জ-ঢাকা রুটে যাতায়াত করেন। তিনি জানিয়েছেন, সকাল ৭ সাতটায় মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে ছাড়ে মর্নিং বার্ড। লঞ্চে আমার এক বন্ধুসহ ঢাকায় আসছিলাম। লঞ্চটি সদরঘাটের একেবার কাছে চলে আসার পর যাত্রীরা নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাৎ করে ঘাটের খালি একটি লঞ্চ আমাদের লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। ভয়ে যাত্রীরা চিৎকার দিয়ে ওঠে। এরপর পানিতে ডুবে গিয়ে দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। এক পর্যায়ে আব্দুর রউফ সাঁতরে উপরে উঠতে পারলেও বন্ধু সত্যরঞ্জন উঠতে পারেনি। উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড ডুবির ঘটনায় এভাবেই ৩৬ জনের মৃত্যু হয়।
ইত্তেফাক/ইউবি