করোনার সংক্রমণ রোধে ২১ দিনের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে গত শনিবার থেকে লকডাউনে গেছে ওয়ারী এলাকা। সব সড়ক ও গলির মুখ বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখলেও খোলা দুটি প্রবেশপথ দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে বের হচ্ছেন স্থানীয়রা। তাদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। ওয়ারীর হট কেকের গলির সামনের প্রবেশপথে গিয়ে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন।
তারা বলছেন, তাদের অনেকেরই ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এজন্য তারা লকডাউন চান না। ওয়্যার স্ট্রিটের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সারা দেশ উন্মুক্ত রেখে শুধু এই এলাকায় লকডাউন পরিচালনা করে সরকার কী বোঝাতে চাইছে তা বুঝতে পারছি না। এই ২১ দিনে আমাদের যে ক্ষতি হবে, সেটা কে পুষিয়ে দেবে? আমাদের তো না খেয়ে মরতে হবে!’ ওয়ারী এলাকা থেকে অনেকেই খাতায় নাম লিখে বা অনুরোধ করে বের হচ্ছেন।
স্থানীয়দের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বেচ্ছাসেবক মঞ্জুরুল কাদের মামুন বলেন, বিশেষ করে প্রাইভেট ব্যাংকে যারা চাকরি করেন, তারা আমাদের খুবই বিরক্ত করছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রীর কথামতো ২১ দিনের লকডাউনে এই এলাকা থেকে কেউ বের বা প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু এলাকার লোক বিষয়টিতে আমাদের সহযোগিতা করছেন না। কেউ কেউ তাদের বের হতে না দিলে রীতিমতো হুমকিও দিচ্ছেন।
অন্যদিকে এলাকার কিছু বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবকদের অনেকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ করেছেন। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির প্রধান ফটক ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তবে ওষুধের দোকান এবং ভেতরের সড়ক মোড়ে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সুপারশপ কোম্পানির ভ্যান সার্ভিসও দেখা গেছে। এসবের মাধ্যমে এলাকাবাসী নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘লকডাউন হবে কি হবে না, এটা আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নয়, সরকার এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরা শুধু সেটা বাস্তবায়ন করছি। স্থানীয় লোকজন যদি মনে করেন লকডাউন করা ঠিক হয়নি, এটা আমাদের বিষয় নয়, এটা তাদের বিষয়। সরকার যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, সেটা অমান্য করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’