বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনায় বইয়ের বাজারে মন্দা

আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২০, ১৯:১৬

করোনা মহামারীকালে দারুণ লোকসান গুণতে হচ্ছে দেশের বই বিক্রেতাদের। বিভিন্ন প্রকাশনীর পাশাপাশি এই ক্ষতির মুখে রয়েছে সাধারণ বই বিক্রেতারা। দৈনিক যেখানে তাদের বিক্রি ছিলো ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার বই সেখানে এই বিক্রি বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকায়। 

সরজমিনে নীলক্ষেত ও বাংলাবাজার সহ বিভিন্ন বইয়ের দোকান ঘুরে জানা যায়, মহামারীর কারণে প্রথম কয়েক মাস দোকান বন্ধ রাখায় অনেক বই নষ্ট হয়ে গেছে। আর এরপর দোকান খুললেও বর্তমান সময়ে যে পরিমাণে বই বিক্রি হচ্ছে তা দিয়ে দোকান ভাড়া মেটাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারাও বিষয়টির সুবিধা নিয়ে বইয়ের দাম কম বলছে এবং দৈনিক খরচ মেটাতে কেনা দামে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে বই। 

করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে বই কেনায় ভাটা পড়েছে। বিশেষত স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বই কিনতে বের হচ্ছে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বইয়ের বদলে তার পিডিএফ কপি সরবরাহ করা হচ্ছে। শিক্ষকরাও বইয়ের পিডিএফ কপি বা ছবি তুলে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দিচ্ছে। ফলে বইয়ের দোকানে আসতে হচ্ছে না একটি বিশাল শ্রেণীর পাঠকের। 

আরো পড়ুন : ৭৬ বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন

আজিজ সুপার মার্কেটের এক বই বিক্রেতা জানান, আগে শিক্ষার্থীরা তাদের রেফারেন্স বই কেনার জন্য দোকানে আসলে তার পাশাপাশি গল্পের বই বা বিভিন্ন লেখকের বই কিনে নিয়ে যেতেন। কিন্তু এখন সারাদিন দোকানে বসে থাকলেও এক দুই জনের বেশি ক্রেতা পাওয়া যায় না। 

পুরাতন বই বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন জানান, নীলক্ষেত বই মার্কেটে সব চেয়ে বেশি বিক্রি হতো পুরাতন বই। যেখানে দৈনিক হাজারের উপর বই বিক্রি হতো, তা বর্তমানে নেমে এসেছে শ’তে। ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। বেলা শেষে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৯০ টাকার বই। এভাবেই চলছে বইয়ের ব্যবসা। 

বই ক্রেতা শাবনাম নওসাদ অন্তরা বলেন, করোনা শুরু হবার পর আজই প্রথম এসেছি। ছোট বোন এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার জন্য বই কিনতে এলাম। আরো আগেই এসব বই কেনার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউন ও করোনার প্রভাবে বই কিনতে আসতে পারিনি। গল্পের বই পড়ার ইচ্ছে থাকলেও বই কিনতে পারিনি এই মহামারিতে। 

বই বিক্রেতা আবদুর রহমান বলেন, সমিতি থেকে ৩০ শতাংশ দোকান ভাড়া কমিয়ে দিলেও বর্তমানে যে বই বিক্রি হচ্ছে তা দিয়ে ভাড়া মেটাতে কষ্ট হচ্ছে। ব্যবসা আগের মত না হলে শিগগিরই ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।

 

 

ইত্তেফাক/আরএ