বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে ৬০ সংগঠনের মানববন্ধন

আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:০২

মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য এবং সংবিধানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ধৃষ্টতাপূর্ণ হুমকির প্রতিবাদে স্বাধীনতা চত্বর (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঘিরে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবীদের ৬০টি সংগঠন। মানববন্ধন থেকে বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান অবমাননার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় মত্স্য ভবন থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, ঢাকা ক্লাব, শাহবাগ মোড় ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাট পর্যন্ত এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাংবাদিক আবেদ খান, ইতিহাসের অধ্যাপক, গবেষক মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, তাজউদ্দিন আহমেদ, মৃণাল কান্তি জোয়ার্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তসহ আরো অনেকে কর্মসূচিতে যোগ দেন। এই কর্মসূচির মূল দাবি—অবিলম্বে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতার এবং জামায়াত-হেফাজতের মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

সম্প্রতি রাজধানীর দোলাইরপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে সে কাজ অবিলম্বে বন্ধের দাবি তুলেছেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। আর গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের এক অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, যে কোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে’। গতকাল মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বক্তব্য (ভাস্কর্যবিরোধী) প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে বাংলার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ জবাব দেবে। পরিণাম ভালো হবে না। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেওয়ার পরেও এখনো তাদের নিয়ে কিছু বলা হয়নি। এটাই আপনাদের সৌভাগ্য। দৃষ্টান্তমূলক পরিণামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

আরও পড়ুন: ভারত আক্রমণের জন্য পিপলস পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর আবেদন

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভাস্কর্যের সঙ্গে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটছে বাংলাদেশে সবচাইতে এলার্মিং ঘটনা সেটি হচ্ছে, জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে নদীতে ছুঁড়ে ফেলার মতো ধৃষ্টতা।

মৌলবাদের আস্ফাালন রুখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শক্তিকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ছাড়াও এ কর্মসূচিতে অংশ নেয় সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশন, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, প্রজন্ম ’৭১, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, ইতিহাস সম্মিলনী, জাতীয় কবিতা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।

ইত্তেফাক/ইউবি