শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সদরঘাটে কমেনি কুলিদের হয়রানি

আপডেট : ০১ মার্চ ২০২১, ০২:৪৫

চাঁদপুর থেকে লঞ্চে করে ঢাকায় আসেন মাহবুবুর রহমান। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নামতেই কুলিরা এসে হাজির। বড় ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছেন তারা। তিনি নিজেই এসব ব্যাগ বহন করতে পারবেন বললেও কোনোভাবেই তারা ছাড়ছেন না। তারা ব্যাগ বহন করে নিয়ে যাবেন যে কোনো মূল্যে। নিরুপায় হয়ে তিনি তাদের ব্যাগ বহন করতে দিলেন। এবার যখনই ঘাট পার হয়ে গেটের সামনে পৌঁছে দিলেন ব্যাগ তখনই ঘটে বিপত্তি। তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি টাকা দাবি করে বসেন তারা। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগিবতণ্ডার পরে কিছু টাকা কমিয়ে নিস্তার পান তিনি। এভাবেই সদরঘাটে কুলিদের হয়রানির বর্ণনা দিচ্ছিলেন ভুক্তভোগী যাত্রী। ঈদের সময় হয়রানি আরো বাড়ে বলে জানান যাত্রীরা। 

এ তো গেল কুলিদের ব্যাপার। ঘাটের গেট পার হতে ব্যাগ বা ছোট ছোট পণ্যের জন্যও ইচ্ছামতো টোল আদায় করেন ইজারাদারের লোকেরা। সদরঘাটে নৌযান ঘাটশ্রমিকদের (কুলি ও ইজারাদার) দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ সাধারণ যাত্রীরা। মালামাল বা পণ্য পরিবহনে ইচ্ছামতো টোল আদায় নিয়ে নিয়মিতই হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে নৌবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিবেশ আগে থেকে অনেক উন্নত হয়েছে।

যাত্রীরা জানান, সদরঘাটের প্রবেশপথে ইজারাদারের লোকেরা ইচ্ছামতো টোল আদায় করেন। অন্যদিকে মালামাল পৌঁছে দেওয়ার পর অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন কুলিরা। তাদের দাবি না মানলে দুর্ব্যবহার করতেও দ্বিধা করেন না। যাত্রীরাও ঝামেলা এড়াতে নিরুপায় হয়ে ঘাটশ্রমিকদের ইচ্ছা অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পণ্য পরিবহনে ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও মানছে না কেউই।

সরেজমিনে সদরঘাটের ৮ নম্বর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশমুখেই দাঁড়িয়ে আছেন মিজান নামে এক ঘাটশ্রমিক। তিনি ইজারাদারের পক্ষ থেকে টোল আদায় করছেন। সাদা একটা কাগজে শুধু টুকে রাখছেন কার কাছ থেকে কত টাকা আদায় করছেন। সেই কাগজ দেখতে চাইলেই তিনি রেগে যান। বলেন, এই হিসাব আপনাদের দেখানো যাবে না। কোন পণ্য থেকে কীভাবে টোল আদায় করেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ভারী পণ্য ছাড়া টোল নেই না। অথচ যাত্রীরা অভিযোগ করেন, তিনি সব পণ্য থেকেই টোল আদায় করেন।

তার কথা বলার পরপরই দেখা গেল কুলি ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে হাতের মুঠোয় কিছু টাকা দিয়ে যাচ্ছেন; কিন্তু কীসের টাকা দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।


এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী বলেন, পণ্য বহন করে ইচ্ছামতো টাকা আদায়ের প্রশ্নই আসে না। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে আমি বলবো আপনারা আমাদের কাছে অভিযোগ জানান। আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। আমরা এসব নিয়েই রাতদিন কাজ করছি।

ইত্তেফাক/এনএ