শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বাস্থ্যবিধি মানছে না লঞ্চ মালিকেরা

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ১৩:৩৫

টানা ১৪দিন কঠোর বিধিনিষেধের পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে স্বল্প পরিসরে সারাদেশে গণপরিবহন চালু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সদরঘাটে শুরু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সদরঘাটে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। সদরঘাটের লঞ্চ চলাচলে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানছে না লঞ্চ মালিকেরা। ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে পল্টুন ত্যাগ করছে লঞ্চগুলো।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ভোর থেকেই সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া-আসা করছে লঞ্চ। ভোর ৫টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ভোলা, ইলিশা, সুরেশ্বর, ওয়াপদা ও চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে মোট ১৮টি লঞ্চ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালকুঠি ঘাটে চাঁদপুরগামী যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। লঞ্চগুলোতে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও মানছে না কেউ। তবে ঠিকই ৬০% ভাড়া বেশি আদায় করা হচ্ছে। চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসা দুইটি লঞ্চে গাদাগাদি করে যাত্রী আনতে দেখা গেছে। মাস্ক পরতেও অনিহা রয়েছে যাত্রীদের। ঘাটে সর্বত্র বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। বরিশালগামী লঞ্চগুলো বিকাল থেকে ছাড়লেও সকাল থেকে যাত্রীদের এসে বসে থাকতে দেখা গেছে। অনেকদিন বসে থাকা সদরঘাটের হকারদের ছুটোছুটি লক্ষণীয়। 

অনেকদিন বন্ধ থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় যাত্রীদের সুবিধার্থে পন্টুন এবং গ্যাংওয়ের কাজ করা হয়েছে। আগে পন্টুন ছিলো ১৮টা তার সাথে ৮টা যোগ করে মোট ২৬টা করা হয়েছে। 

No description available.

মুলাদীগামী আবদুর রশীদ বলেন, ‘উত্তরায় একটা মাদরাসায় কাজ করি। লকডাউনে সব বন্ধ এতদিন আটকে ছিলাম। আজ সুযোগ বুঝে চলে যাচ্ছি। লঞ্চে জায়গা পামু না ভেবে সকালেই এসে বসে আছি।’ 

চাঁদপুরগামী আবদুল হক বলেন, ‘আমি ঘোড়াশাল গ্যাসলাইনের কাজ করি। লকডাউনে কাজ-কর্ম সব বন্ধ। আজকে লঞ্চ চালু হবে শুনে আর দেরি করি নাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।’ 

পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন আজিজ ব্যাপারী। অনেকদিন ধরে ব্যবসা বন্ধ থাকায় নিরুপায় হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘আজকে লঞ্চ চালু হওয়ায় শান্তি লাগছে। পরিবার নিয়ে ঈদের উদ্দেশ্যে বাড়ি যাচ্ছি। কবে ফিরবো ঠিক নেই।’ 

No description available.

এ বিষয়ে ঢাকা নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা টার্মিনালে আছি। আমরা আমাদের ট্রাফিক পুলিশ দ্বারা মাইকিং করে শতভাগ মাস্ক নিশ্চিত করেছি। প্রতিটি টিকেট কাউন্টারের আমাদের লোক দ্বারা নিজ উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ করছি। এক্ষেত্রে যাত্রীরা অসচেতন অনেককেই জোর করে মাস্ক পরাতে হচ্ছে। যাত্রী উঠানোর বিষয়ে আমরা লঞ্চ মালিক ও কর্মচারীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। আমি নিজে সকাল থেকে বেশ কয়েকটি লঞ্চ নির্দিষ্ট সময়ের ১০ থেকে ২০ মিনিট আগে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছাড়তে বাধ্য করেছি।’

তিনি জানান, সকাল থেকে আমাদের ১৮ টি লঞ্চ সারাদেশে ছেড়ে গেছে। নর্মালি আমাদের দিনে ১৫০টি লঞ্চ আসা যাওয়া করেলও যাত্রীদের সুবিধায় ঈদের আগে আমাদের নতুন ৩০টি লঞ্চ যোগ হবে।

লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘সরকারের সব নির্দেশনা আমরা মেনে চলেই আমাদের লঞ্চ চলাচল করছে।’ 

লঞ্চবোঝাই যাত্রী নেওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফেরি বোঝাই করে যখন যাত্রী, গাড়ি নেওয়া হয় তখন আপনারা কোথায় থাকেন? ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের ভিড় থাকবেই আমরা নিয়ম মেনেই চলব।’

ইত্তেফাক/এএএম