শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নানা অজুহাতে বাইরে আসছে মানুষ

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ০৬:২১

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে সরকারঘোষিত দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। গতকাল ছিল বিধিনিষেধের পঞ্চম দিন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লা ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায় নানা অজুহাতে ঘরের বাইরে আসছে মানুষ।

পাশাপাশি সড়কে বেড়েছে জনসমাগম ও যান চলাচল। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোড়ে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট। এসব চেকপোস্টে পরিবহন দেখলেই গতি রোধ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানতে চাচ্ছেন কেন বের হয়েছেন, কোথায় যাবেন। সুনির্দিষ্ট কারণ ও প্রমাণ দিতে পারলেই পরিবহনগুলো ছাড়া হচ্ছে চেকপোস্ট থেকে।

পল্লবী জোনের ট্রাফিক এসি ইলিয়াস হোসেন জানান, সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। তবে সরকারি আইন অমান্য করলে করা হচ্ছে মামলা ও জরিমানা।

কঠোর বিধিনিষেধে রাজধানীর চিত্র

ছবি: বিপ্লব মল্লিক।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে রিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল। তবে, মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মামলা ও জরিমানা করার হার। হেঁটে, মোটরসাইকেলে, বাইসাইকেলে ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে বাইরে আসা মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। যারা অকারণে বাইরে বের হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শেখ মোহাম্মদ শামীম বলেন, অন্যান্য দিনের চেয়ে রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়েছে। আমরা সড়কে আছি, বাইরে বের হওয়া মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। বেশির ভাগই যৌক্তিক কারণ দেখাচ্ছে। যারা যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারছেন না, আমরা তাদের মামলা দিচ্ছি।

চেকপোস্টে বেড়েছে যানবাহনের চাপ

ছবি: বিপ্লব মল্লিক।

গত মে ও জুনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর জুলাইয়ের প্রথম ১৩ দিন দেশব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। ঈদুল আজহা উদ্যাপনের জন্য ১৪-২২ জুলাই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। তবে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফের দ্বিতীয় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করে সরকার।

ঈদুল আজহার আগে ও পরের এই বিধিনিষেধ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গ্রেফতার, জরিমানা ও মামলার হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঈদের আগেই বেশি কঠোর ছিল পুলিশ। ঐ সময় প্রথম তিন দিনে রাজধানীতে গ্রেফতার ও জরিমানার পরিমাণ ছিল দ্বিতীয় দফার প্রথম তিন দিনের চেয়ে বেশি।

তবে ডিএমপির দাবি, ঈদের আগের বিধিনিষেধে মানুষের বাড়ি যাওয়ার তাড়া ছিল। তারা বিধিনিষেধ ও আইন উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হতেন। কিন্তু ঈদের পর মানুষের এই তাড়া নেই। অনেকে বাড়ি থেকে এখনো ঢাকায় ফেরেনি। তাই অহেতুক ঘোরাফেরাও কম।

কঠোর বিধিনিষেধে রাজধানীর চিত্র

ছবি: বিপ্লব মল্লিক।

ঈদের আগের বিধিনিষেধে প্রথম তিন দিনে রাজধানীতে গ্রেফতার হয় ১ হাজার ৪৯১ জন। মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয় ৭৬৬ জনকে। একই দিনে ১ হাজার ৩৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। জরিমানা আদায় করে ২৯ লাখ ৩১ হাজার ৬০০ টাকা। পক্ষান্তরে ঈদের পরে প্রথম তিন দিনে মহানগরীতে ১ হাজার ৩৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয় ৫৭৩ জনকে।

অর্থাৎ ঈদের পরের লকডাউনের চেয়ে আগের বিধিনিষেধে ১১৮ জন বেশি গ্রেফতার হয়েছিল। দ্বিতীয় বারের ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ১ হাজার ৪০৩টি গাড়িকে ৩৪ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে।

ইত্তেফাক/এএএম