ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আলোচিত ফিল্মি স্টাইলে এসএসসি পরীক্ষার্থী তরুণীকে অপহরণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী মো. জসীম উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। র্যাব উক্ত ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের গ্রেফতারের ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত অপহরণকারী ও মামলার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী মো. জসিম উদ্দিনকে (২৫) গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
খন্দকার আল মঈন জানান, শনিবার (৯ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণীকে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা ভূক্তভোগী তরুণীকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার সুহিলপুর এলাকায় তরুণীকে নামিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় জসিম উদ্দিনসহ ৫ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর- ১০।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি থেকে জানা যায়, মো. জসিম উদ্দিন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। ভূক্তভোগী তরুণীর ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন যাবৎ সে এসএসসি পরিক্ষার্থী তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। স্কুলে যাওয়া ও প্রাইভেট পড়তে আসা-যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন প্রায়ই তরুণীকে উত্যক্ত করত বলে স্বীকার করে। কিন্তু তরুণী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় জসিম উদ্দিন তাকে অপহরণসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। পরে (৯ অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে তরুণী স্কুল শেষে বাসায় যাওয়ার পথে জসিম উদ্দিন ও তার কয়েকজন সহযোগী (ইরফান এবং আশিক) সহ ভূক্তভোগী তরুণীকে জোরপূর্বক টানা-হেচড়া করে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
র্যাব আরও জানায়, পরবর্তীতে বিকেল আনুমানিক একইদিন সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জোরপূর্বক আটকে রেখে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে জসিম উদ্দিন তার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় ভূক্তভোগী তরুণীকে নিয়ে যায়। অতঃপর ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যম ও এলাকায় জানাজানি হওয়ায় গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন ভূক্তভোগীকে আনুমানিক রাত ৮টায় ঘটিকায় ছেড়ে দিয়ে পলায়ন করে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন রাজধানীর বাড্ডায় তার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন প্রাইভেটকারটি তার এক আত্মীয়ের নিকট হতে ভাড়ায় গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ইত্তেফাক/কেএইচ/এফএস/এসজেড