শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘মুজিবনগর সরকার ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:২৭

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের উদ্যোগে ‘মুজিবনগর সরকার ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সেমিনারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও রাষ্ট্রগঠনের আবশ্যিক উপাদান একটি আনুষ্ঠানিক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আইন ও বাস্তবতার নিরীখে ব্যাপকভাবে অনুভূত হতে থাকে, মুজিবনগর সরকার তারই প্রতিফলন। ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে সরকার গঠন করা হলে স্বাধীনতাকামী মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।’

তিনি বলেন, ‘দেশ পরিচালনার জন্য তৎকালীন বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমানও তাদের মধ্যে একজন ছিলেন। জাতিসংঘ কনভেনশনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জনগণ যাকে ক্ষমতায় বসায় তিনিই রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। সে হিসেবে জিয়ার প্রথম মেয়াদের রাষ্ট্রপতির পদ অবৈধ ছিল। আবার ’৭৫ পরবর্তীতে জনগণের ক্ষমতা খর্ব করে জিয়া নিজেকে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। যা পরবর্তীতে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা হয়।’

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষিতে তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ, সহনশীলতা ও পরমতসহিষ্ণুতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এজন্য আমাদের মূল্যবোধের প্রতি যত্নবান হতে হবে। সেইসঙ্গে সকলের মাঝে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। সবাই মিলে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিরাজগঞ্জ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, মুজিবনগর সরকারের সময়ে ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি পত্রিকা বের  হয়। পত্রিকাটি তাদের ছাব্বিশটি সংখ্যা প্রকাশ করেছিল। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এ সকল দলিল পর্যালোচনা ও গবেষণা করার মাধ্যমে আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা আরো বেশি জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হব।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনের প্রথমদিকে দেশ পরিচালনার জন্য একটি সরকার অবশ্যক ছিল। এভাবে মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত দেশ এই সরকারের অধীনে ছিল। এর নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে তথ্য ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এটি বর্তমান প্রজন্মের জন্য একটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ঘটনা।’

এছাড়া আলোচক হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম এবং বিশিষ্ট কলামিস্ট অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বক্তব্য প্রদান করেন।

আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু আমাদের উদ্দীপনামূলক নেতৃত্বের স্থায়ী উৎস: আতিউর রহমান

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সদস্য-সচিব সৌরভ জাহাঙ্গীর। এছাড়া বিশিষ্ট লেখক বাকি চৌধুরী নবাব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ কলামিস্টগণ বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় প্রগতিশীল কলামিস্ট এবং তরুণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/নূহু