বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘নাগরিক নিরাপত্তায় বৃহৎ ঐক্যের প্রয়োজন’

আপডেট : ২৫ মে ২০১৯, ২০:২৯
দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক নিরাপত্তা জোটের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নাগরিকের নিরাপত্তায় বৃহৎ ঐক্যের প্রয়োজন।

 

গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৫৪টি এবং শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৩৪টি। ১৪৪ শিশু খুন হয়েছে। একই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১৮ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। আরো ৬ জন গুম হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
 
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আইনের শাসন, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য তুলে ধরেন। ‘নাগরিক নিরাপত্তা জোট এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। বেশ কয়েকটি সামাজিক আন্দোলনের সংগঠনের সমন্বয়ে এই নাগরিক নিরাপত্তা জোট গঠিত হয়। যারা এখনো এ জোটের অর্ন্তভুক্ত হয়নি তাদের জোটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। রাজনৈতিক দলের ভূমিকায় শূন্যতা তৈরি হওয়ায় নাগরিকদের নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
 
মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক থাকা দরকার। কিন্তু সেটা তো দেখা যাচ্ছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার, আদালতের নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না।
 
নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, সারা দেশে ভীতির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। সবাই মিলে কর্মসূচি নিতে হবে।
 
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে মুক্তচিন্তা ও বাক্স্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। কোনো জবাবদিহিতা নেই। দলীয়করণ বন্ধ করে সব প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজাতে হবে।
 

 

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শান্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকার সুরক্ষা, ক্ষু নৃগোষ্ঠী ও অনগ্রসর অধিকারের স্বীকৃতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা, বৈষম্যবিরোধী আইন অনুমোদন, দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ সব কমিশনকে শক্তিশালী করাসহ ১১টি দাবি তুলে ধরে নতুন এ জোটের লিখিত বক্তব্যে পাঁচটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। 
 
দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বরাবার স্মারকলিপি প্রদান, বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় ও যৌথভাবে প্রতিবাদ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং তরুণ জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার রক্ষায় ও জঙ্গিবাদ দমনে সম্পৃক্ত করতে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। 
 
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এএলআরডি’র নিবার্হী পরিচালক শামসুল হুদা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নিবার্হী পরিচালক শীপা হাফিজা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নিবার্হী পরিচালক শাহীন আনাম, জিয়াউদ্দিন তারিক আলী, জাকির হোসেন, শরীফ জামিল সহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। 
 
ইত্তেফাক/এমআই