শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ

আপডেট : ০৪ জুলাই ২০১৯, ১১:২৭

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’এর সেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে। এই সেবা কার্যক্রমের উদ্ধোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে নতুন দিক খুলে দেবে। রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে এটি।

রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এক দশমিক ৭৬ একর জমিতে নির্মিত ১৮ তলাবিশিষ্ট এই বার্ন ইনস্টিটিউট গতবছর ২৪ অক্টোবরে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ইনস্টিটিউটে বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট এবং একাডেমিক উইং মিলে তিনটি ব্লক থাকছে। নির্মাণ কাজ পরিচালিত হয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।খবর বাসসের

ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রথমে পাঁচটি শয্যা নিয়ে বার্ন ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এর পর ধাপে ধাপে তা ১শ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। এখন এটি পাঁচশ’ শয্যার ইনস্টিটিউটে রূপান্তরিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বার্ন চিকিৎসার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিল।

আরও পড়ুন: হন্ডুরাসে নৌকা ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু

জানা গেছে, রোগীর চিকিৎসার জন্য রয়েছে ৫০০ শয্যা। এ ছাড়া গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ২২টি শয্যা রয়েছে। রোগীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ২২ শয্যা বিশিষ্ট হাই ডেফিসিয়েন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ১২টি অপারেশন থিয়েটার এবং একটি অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড আছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগী নিয়ে আসার জন্য ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড সুবিধা রাখা হয়েছে। হাসপাতালের পার্কিংয়ে একসঙ্গে ১৮০টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা থাকবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের পরই দেশব্যাপী পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। শত শত মানুষ পেট্রোল বোমায় হতাহত হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল বোমায় আহত হয়ে ঢাকায় আনার পথেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আবার অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শয্যার তুলনায় কয়েক গুণ রোগী ভর্তি থাকায় সেখানেও সংকুলান করতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।

এসব বিষয় বিবেচনা করেই ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের নভেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই ইনস্টিটিউটের অনুমোদন দেওয় হয়।
২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক ডা. সামন্ত লালের প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১শ’ ও পরে ৩শ’ হয়।

ইত্তেফাক/এমআরএম