কোরবানি ঈদের এখনো প্রায় এক মাস বাকি। ঈদে বিভিন্ন মশলার মধ্যে পেঁয়াজের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। বাজারে পেঁয়াজও রয়েছে চাহিদার চেয়ে বেশি। তারপরও ঈদের আগেই পেঁয়াজের বাজার রীতিমতো অস্থির হয়ে উঠেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। তাদের আশঙ্কা, কারসাজি করে একটি অসাধু চক্র এভাবে দাম বাড়াচ্ছে।
তবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদকে টার্গেট করে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে, আমরা বাজার মনিটরিং করছি। মন্ত্রী বলেন, আশা করছি দ্রুত পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তবে দাম না কমলে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। এ ব্যাপারে টিসিবির সাথে কথা হয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত মাসে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে প্রণোদনা তুলে নেওয়ার পর থেকেই সে দেশের পেঁয়াজের বাজার উর্ধ্বমুখী। আর ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যায় পেঁয়াজের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে স্থানীয় বাজারেও পেঁয়াজের সরবরাহ কম। তাই দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে ২৪ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ১৭ লাখ টন দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এনবিআরের তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ, আক্রান্ত ২২
গতকাল বুধবার রাজধানীর খুচরাবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৪৫ থেকে ৫২ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এক মাস আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম: সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমরা জাতীয় রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে পেরেছি। মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর আমরা আয় করেছি ৪৬.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ইত্তেফাক/অনি