শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নদী আমাদের মায়ের মতো: পরিকল্পনামন্ত্রী

আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৭

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, 'নদী আমাদের মায়ের মতো। সন্তান হিসেবে আমাদেরকে নদী রক্ষা করতে হবে।' বুধবার রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর উচ্ছেদকৃত তীর ভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম প্রকল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিআইডব্লিউটিএ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।অনুষ্ঠানে ওই চারটি নদীর দখল ও দূষণরোধ এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করছেন। তাঁর নেতৃতেই বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করে গেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশের উন্নয়ন সুরক্ষিত হবে। নদীর অবৈধ দখল থেকে নদীকে বাঁচাতে আমরা কাজ করছি। আমরা গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই, এক্ষেত্রে কোন ধরনের সমঝোতা করবো না।' নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় নদী উদ্ধারে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ সমর্থন দিয়েছে। এ সমর্থন ধরে রাখতে চাই। আমাদের কাজ যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, মুখ থুবড়ে না পড়ে- সে প্রচেষ্টা থাকবে।

অনুষ্ঠানে খালিদ মাহমুদ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ঢাকাকে রক্ষা করব। নদীকে রক্ষার জন্য কমিউনিটি পুলিশ গঠন করা হবে।'

উল্লেখ্য, সাড়ে আটশ’ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কর্মশালায় জানানো হয়, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক সম্প্রতি উচ্ছেদের মাধ্যমে প্রায় ১৫২ একর ভূমি উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত ভূমি প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটিতে ৩,৮০৩টি সীমানা পিলার স্থাপন কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়া ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১০ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার, ৪০ কিলোমিটার ওয়াল, ১২ কিলোমিটার পাইলিং, বনায়ন, ৩টি ইকোপার্ক, ২টি পর্যটন বান্ধব পার্ক, ০.৩ কিলোমিটার আরসিসি সেতু, ১০৫.১২ কিলোমিটার রেলিং, ০৬টি পন্টুন, ০৬টি এস্কেভেটর, ১১টি আরসিসি জেটি, ৩৮টি স্পার্ড ও ১০০ টি আরসিসি সিড়ি সহ ৪০৯ টি বসার বেঞ্চ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে ০৬টি লংবুম এস্কেভেটর এবং ৬টি পন্টুন ক্রয় এর চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে এবং পন্টুন তৈরি এবং অন্যান্য কাজও চলমান রয়েছে।

কর্মশালায় আরও জানানো হয়, বর্তমানে প্রকল্প বাস্তবায়ন সহ বাস্তবতার নিরীখে দেখা যাচ্ছে ঢাকা শহরের চারদিকে নদী সমূহ দূষণমুক্ত করে একটি নদী মাতৃক রাজধানীর কলেবর সৃষ্টি করতে হতে প্রকল্প আরো কিছু কার্যক্রম বৃদ্ধি করা অপরিহার্য্য। যেমন নদী খনন কাজ সহ ইতোমধ্যে প্রাক্কলিত কিছু আইটেমের পরিবর্তন হওয়ায় এবং কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় আলোচ্য প্রকল্পটি সংশোধনের আবশ্যকতা রয়েছে। তারই নিরীখে ইতোমধ্যে বিআইব্লিউটিএ কর্তৃক সংশোধিত প্রকল্প গ্রহণ করে এতে প্রায় ২ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা করা হয়েছে। আলোচ্য সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে ঢাকা শহরের চারিদিকে নৌপথ উন্নয়নে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূর্ণ হবে ।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি