মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আবারও শাপলা চত্বরে জমায়েতের হুমকি হেফাজতের

আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:০২

ভোলার বোরহানউদ্দীনে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি না হলে দাবি আদায়ে আবারও শাপলা চত্বরে গণজমায়েতের হুমকি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক এ হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মহানবি (সা)-এর সম্মান অনেক বেশি। যদি তাদের সম্মান রক্ষা করতে না পারেন তাহলে আপনাদের গদিতে আগুন দেওয়া হবে। দোষীদের শাস্তি না হলে আমরা আবারও শাপলা চত্বরে যাব।’ প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে গণজমায়েত করে হেফাজত। সে সময় রাজধানীজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।


গতকালের সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর আমির আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী বলেন, ‘আল্লাহর নবির সঙ্গে যারা বেয়াদবি করেছে, তাদের জনতা কখনো মেনে নেবে না। আর যারা আল্লাহর নবির মান-ইজ্জত রক্ষা করতে পারে না, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘একটি আইন করতে হবে যে আইনে আল্লাহ তায়ালা ও নবি-রাসুলদের কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। এই আইন না হওয়া পর্যন্ত হেফাজতের আন্দোলন চলবে।’

এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো—ভোলায় পুলিশের মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও ভোলার এসপিকে প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ থেকে ইস্কনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। সমাবেশে হেফাজতের ঢাকা মহানগরের নেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘নবিপ্রেমীদের ওপর অত্যাচারে প্রথম নয়। যারা আমার এই ভাইদের মেরেছে তাদের বিচার যদি না হয় তাহলে আরেকটি শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটবে।’

বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি : খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, ‘ভোলায় তাওহিদি জনতার বুকে গুলি চালিয়ে সরকার ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ জুলুম কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। ভোলার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।’ ভোলার বোরহানউদ্দীনে গুলিবর্ষণে শাহাদত বরণকারীদের জন্য আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বিকালে পুরানা পল্টনের মজলিস মিলনায়তনে সংগঠনের ঢাকা মহানগর সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী প্রমুখ।

আরও পড়ুন: ভোলার সেই বিপ্লবের ভগ্নিপতি নিখোঁজ, জিডি

এদিকে গতকাল বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশেপাশের কয়েকটি স্থানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এতে নেতৃত্ব দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা)-কে কটূক্তির অভিযোগে গত রবিবার সকালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঈদগাহ মসজিদ চত্বরে তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ডাকা হয়। এতে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জনতা। এসময় পুলিশ গুলি ছুড়লে চার জন নিহত হন।

ইত্তেফাক/এসি