শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাসপাতালে অতিরিক্ত চাপ, করোনায় মৃতদের লাশের স্তূপ

আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৪৭

করোনাভাইরাসের কারণে জর্জরিত ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্য। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত আক্রান্ত রোগীর চাপের পাশাপাশি মৃতদেহের জন্যও স্থান দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। মর্গ পরিপূর্ণ যার কারণে কোনো লাশ বেডেই পড়ে আছে, কোনোটা ট্রলিতে। কতগুলো লাশ আবার স্তূপ আকারে রেখে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে।

এমন ভয়ঙ্কর ঘটনারই সাক্ষী হয়েছে ছত্তিশগড়ের রায়পুরের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল ভীমরাও আম্বেদকার মেমোরিয়াল হাসপাতাল। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

জানা যায়, ছত্তিশগড় রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, হাসপাতালে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃতদেহ রাখার আর কোনো জায়গা নেই ভীমরাও আম্বেদকার মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সেখানে ফ্রিজার তো দূরের কথা, মাটিতে স্তুপ আকারে পড়ে আছে মৃতদেহগুলো। সংক্রমণ ও মৃতের হার এতোটাই বেড়েছে যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের কর্মীরাও। তারাও যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃতদেহগুলোর শেষকৃত্যের কাজ করার চেষ্টা করছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ছত্তিশগড়ের সকল হাসপাতালের অক্সিজেনযুক্ত আইসিইউ বেড শতভাগ ভর্তি। নতুন রোগী নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই সেখানে।

রায়পুরের প্রধান চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মীরা বাঘেল বলেছেন, ‘কেউ ভাবতে পারছেন না একদিনে কতজন করে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। স্বাভাবিক মৃত্যুর হারের জন্য আমাদের হাসপাতালগুলোতে যথেষ্ট ফ্রিজার রয়েছে। কিন্তু একেকটা জায়গা থেকে ১০-২০ জনের মৃত্যুসংবাদ আসছে। সেই সংখ্যক জায়গা প্রস্তুত করার পর দেখা যাচ্ছে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ জনে। একসঙ্গে এতো ফ্রিজার কোথায় পাওয়া যাবে? শ্মশানগুলোতেও কোনো জায়গা নেই আর।’

জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৫৫ থেকে ৬০টি করে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মৃতদেহ পোড়ানোর কাজ চলছে রায়পুর শহরে। গত ২৪ ঘণ্টায় ছত্তিশগড়ে নতুন করে আরও ১০ হাজার ৫২১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে মারা গেছে ১২২ জন। রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি। মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার।

সমগ্র ভারতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫৩ জনের ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৯ জনের।

ইত্তেফাক/টিআর