বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিধিনিষেধে আটকে পড়ায় টিকার দ্বিতীয় ডোজ কোথায়?

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২১, ২১:০২

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে এক সপ্তাহের চলমান লকডাউন আরও ৭দিন বাড়ানো হয়েছে। লকডাউনের কারণে অনেকে কর্মস্থলে বা গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। ফলে যারা দুরের কোনো কেন্দ্র থেকে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন তারা নির্ধারিত সময়ে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন না।  

টিকার দ্বিতীয় ডোজ মিস করে অনেকে দুশ্চিন্তায় আছেন। তবে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, চিন্তার কোনো কারণ নেই। দ্বিতীয় ডোজ দেরি করে নিলেও কোনো সমস্যা হবে না বরং টিকার কার্যকরী ক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। ৮ মাস পরে নিলেও কোনো অসুবিধা নেই।

লকডাউনের আগে কুষ্টিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন মেহেনূরনেচ্ছা দম্পতি। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় চলমান লকডাউনে তাদের ঢাকায় থাকতে হয়েছে। ফলে কুষ্টিয়া থেকে ১৪ এপ্রিল টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার নির্ধারিত সময় থাকলেও তারা টিকা নিতে পারেনি।

এ বিষয়ে মেহেনূরনেচ্ছা দম্পতির নাতি রায়হান শাহরিয়ার রুমি বলেন, ‘আমার নানা দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছে। নিয়মিত তার কিডনির ডায়ালাইসিস করাতে হয়।  তাই নানিসহ ঢাকাতে থাকতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় ১৪ এপ্রিল তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও তারা মিস করছে। এখন টিকা নেওয়া নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় আছে। দ্বিতীয় ডোজ যদি ঢাকায় নেওয়া যায় তাহলে উপকার হয়।’

কবি, সাহিত্যিক ও গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী ফেব্রুয়ারি ২৩ তারিখে ঢাকার শিশু হাসপাতালে করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছি। মার্চে আমরা যশোরে এসেছি। বর্তমানে আমরা যশোরে আটকে গেছি। এ সময় ঢাকা ফেরা সম্ভব না। আমার দ্বিতীয় ডোজের সময় আগামী ২৩ এপ্রিল। এ অবস্থায় আমরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ কোথায় কীভাবে গ্রহণ করবো? এমন অনেকেই আমার মতো সংকটে আছেন। অনুগ্রহ করে এই বিষয়ে সমাধান জানালে অনেকেই উপকৃত হবেন।’ করোনা দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে আরও অনেকেই একই অসুবিধার কথা জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলমের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

এ প্রসঙ্গে হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন,  প্রথম টিকা গ্রহণের পর দ্বিতীয় টিকা গ্রহণে যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয় তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। বরং দেরিতে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করলে টিকার কার্যকরী ক্ষমতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  ৮ সপ্তাহ অথবা ১২ সপ্তাহ পর টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলে আরও দ্রুত কাজ করবে। এ বিষয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। তবে লকডাউনের কারণে টিকা গ্রহীতাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি উপস্থিতিতে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সসহ ২৫ জনকে টিকা দেওয়ার পর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন করোনার দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি টিকার প্রথম ডোজও দেওয়া হচ্ছে।


ইত্তেফাক/ইউবি