মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যশোরে আইসোলেশন ওয়ার্ডে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী

আপডেট : ১৪ জুন ২০২১, ১৩:২৩

সীমান্তের সর্বাপেক্ষা ঝুঁকিপূর্ণ জেলা যশোরে করোনার বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই এখানে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় গাদাগাদি করে তাদের রাখতে হচ্ছে।

রোগীর সংখ্যা বাড়লেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে করছেন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন। ইত্তেফাককে তিনি বলেন, করোনা রোগী কিছুদিন ধরে বাড়লেও নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় তা ৩৫ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের দিন ৯ জুন থেকে অন্তত দুই সপ্তাহ এমন পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকলেই করোনার লাগাম টেনে ধরা যাবে। এজন্য মানুষের চলাচল এবং গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। একই সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনপ্রতিনিধিদের আরও সম্পৃক্ত হওয়া দরকার।

আবারও যশোর হাসপাতাল থেকে পালালো করোনা রোগী

তিনি বলেন, সীমান্তের বৈধপথে যারা আসছেন, তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রাখা হচ্ছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী জেলার অবৈধপথ দিয়ে যশোর জেলায় আসা মানুষদের মধ্যে পজিটিভ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এটা নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, গতকাল রবিবার হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে ৮০ শয্যার বিপরীতে ৬৪ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে ২৫ জন ভারতফেরত। আর করোনা সন্দেহভাজনদের ইয়েলো জোনের ১০ শয্যার পুরুষ ওয়ার্ডে ২৯ জন এবং নারী ওয়ার্ডের ৯ শয্যার বিপরীতে ১৩ জন ভর্তি আছেন। এই জোনের শয্যা বাড়ানোর সুযোগ না থাকায় মেঝেতে রোগীদের গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে, বলেন আরএমও। অবশ্য বেসরকারি উদ্যোগে চালু হওয়া তিন শয্যার আইসিইউতে গতকাল একজন রোগী ভর্তি ছিলেন।

সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণের হার মার্চ মাসে ১২ শতাংশ থেকে এপ্রিলে ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়। মে মাসে তা ১৮ শতাংশে নেমে আসে। জুন মাসের ১২ দিনে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় তা ৩৫ শতাংশে উঠেছে। এ মাসে ৩ হাজার ৪৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ২১৭ জনের পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ মাসে সাত জন রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি আরও জানান, জেলা সদরের বাইরে সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের জন্য ৪৫টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা হাসপাতালেও নতুন ২৫টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত বুধবার মধ্যরাত থেকে যশোর ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় ‘বিধিনিষেধ’ নামের ‘অঘোষিত লকডাউন’ কার্যকর করা হয়। এ বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হবে বলে আভাষ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যশোর শহরে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হচ্ছে। সোম-মঙ্গলবার পরিস্থিতি দেখে নতুন সিদ্ধান্ত নেব। না কমলে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হবে।

ইত্তেফাক/এমআর