খুলনায় করোনা সংক্রমণরোধে সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। মানুষের চলাচল বন্ধে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও গলির মাথায় বাঁশ দিয়ে বেরিকেড দেওয়া হয়েছে। তবে, লকডাউনের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকালে খুলনা মহানগরীতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। এদিকে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা পালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার লকডাউনের প্রথম দিনের শুরুতে নগরীতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। কোনো কোনো সড়কে ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল করতে দেখে গেছে। এছাড়া অলিগলিতে মানুষের চলাচল অব্যাহত রয়েছে। নগরীতে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন চলাচল করছে না। তবে জেলখানা ও রূপসাঘাটের মাঝিদের লকডাউন মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ জনের অধিক যাত্রী পারাপার করা যাবে না- মর্মে নির্দেশনা থাকলেও বাস্তব চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।
আজিজুল ইসলাম রাজু নামে একজন বলেন, তিনি খুলনা মহানগরীর একটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি সকালে ট্রলারে রূপসা নদী পার হয়েছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক দিনে ট্রলারের মাঝিরা ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী ওঠালেও আজ ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকা পারাপার করছেন। তারা নিয়ম নীতির কোনো তোয়াক্কা করছেন না।
নগরীর শেখপাড়া এলাকার রিকশাচালক বাবুল মিয়া বলেন, ‘ঘরে কোনো দানা-পানি নেই। তাই রিকশা নিয়ে বারইছি। যদি অলিগলিতে চালাইয়া কিছু টাকা হয়, তাই দিয়ে এক বেলার খাবার হয়ে যাবে নে। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমি কোনো যাত্রী পাইনি।’
নগরীর গোবরচাকা এলাকার ইজিবাইক চালক ডাবলু মিয়া বলেন, ইজিবাইক বের করব কি না ভাবছি। তবে, পুলিশের ভয়ে রাস্তায় বের হতে ভয় লাগছে।
করোনার সংক্রমণ রোধে ২২ জুন থেকে ২৮ জুন পযন্ত সমগ্র খুলনায় শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসন গণবিজ্ঞপ্তিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, খুলনায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বদ্ধির কারণে ২২ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত সকল ধরণের দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল ও কোচিং সেন্টারসমূহ বন্ধ থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও কাঁচাবাজারের দোকান প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। উক্ত সময়ের মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো পার্সেল আকারে খাবার সরবরাহ করতে পারবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাংকে লেনদেন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। সবধরনের পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি