শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনা টিকার আওতায় ১ কোটি ৫ লাখ মানুষ

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ০২:৫৭

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি ব্যাপক ভিত্তিক টিকাদানের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের এই মতামত আমলে নিয়েছে সরকার। টিকাদান বাড়িয়ে করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গণহারে টিকাদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। আগামী সাত আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। দেশে এ পর্যন্ত টিকা এসেছে ২ কোটি ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৮২০ ডোজ। এরমধ্যে এক কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা সরকারের কেনা। বাকিটা উপহারের। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭৯ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

দেশে আসা মোট টিকার মধ্যে আছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২০০, ফাইজারের ১ লাখ ৬২০, সিনোফার্মের ৫১ লাখ এবং মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ। মানুষের মাঝে এ পর্যন্ত টিকা প্রয়োগ করার জন্য সারাদেশে টিকাদান কেন্দ্রে টিকা আছে ৮৮ লাখ ১১ হাজার ৩৪১ ডোজ। অর্থাত্ এক কোটি ৫ লাখ ৭২ হাজার ৯১০ জন মানুষ এখন টিকার আওতায় আসছে। এছাড়া দেশে এখন টিকা মজুদ আছে ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার ২০০ ডোজ। এরমধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ ও মর্ডানার ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ডোজ টিকা আছে।

দেশে টিকা নিয়েছেন ১ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় আনতে চায় সরকার। সেই হিসাবে ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৮ হাজার মানুষকে টিকা দিতে হবে। সেজন্য দুই ডোজের টিকার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ২৭ কোটি ৪ লাখ ১ হাজার ৬০০ ডোজ। তবে এক ডোজ টিকার ক্ষেত্রে কিছু কম প্রয়োজন হবে। সরকার জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা ৭ কোটি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে মোট টিকার প্রয়োজন হতে পারে ২০ কোটি ৪ লাখ ১ হাজার ৬০০ ডোজ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের মানুষের জন্য ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা যে বিভিন্ন ভ্যাকসিন অর্ডার করেছি এবং প্রতিশ্রুতি পেয়েছি তার সংখ্যা ২১ কোটি। এর মধ্যে চায়নার ৩ কোটি, ৩ কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা, কোভ্যাক্সের ৭ কোটি, রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ১ কোটি এবং জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির ৭ কোটি, এগুলো পর্যায়ক্রমে আগামী বছরের শুরুর মধ্যে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

আগামী সপ্তাহ থেকে ফাইজার-সিনোফার্মার টিকা দেওয়া শুরু

ছবি: সংগৃহীত

অর্থাৎ ২১ কোটি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা আমরা করেছি। এরমধ্যে কোভ্যাক্সের ৭ কোটি উপহার হিসেবে আসবে। এ ভ্যাকসিনগুলো দেওয়া হলে আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ লোককে দেওয়া যাবে। ভ্যাকসিনগুলো আমরা যদি পাই, তাহলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিনে কোনো দেশ থেকে আশা করি পিছিয়ে থাকবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, সামনে কেনা ও উপহারের আরো টিকা দেশে আসছে। টিকা নিয়ে কোন ধরনের ধরনের সমস্যা হবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) ডা. মিজানুর রহমান বলেন, গাজীপুরে গণহারে গার্মেন্টস শ্রমিকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মানুষের মাঝে টিকা দেওয়ার যে পরিসংখ্যান আছে, সেখানে শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বিদেশগামী শিক্ষার্থীরা টিকার নিবন্ধন করবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত

দেশে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম আসে ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ ডোজ টিকা। এসব টিকা ছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড। তার ঠিক চারদিন পর আসে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তির প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড। পরে দ্বিতীয় চালানে ভারত থেকে কেনা ২০ লাখ ডোজ টিকা আসে।

২৬ মার্চের পর টিকার আর কোনও চালান ভারত থেকে আসেনি। এরপর দেশে চীনের তৈরি সিনোফার্মের ভ্যাকসিন ৫ লাখ ডোজ দেশটির সরকার উপহার হিসেবে পাঠায় গত ১২ মে। এখন পর্যন্ত উপহার এবং কেনা টিকাসহ মোট ৫১ লাখ ডোজ এসেছে। এরমধ্যে সিনোফার্মের উপহারের আছে ১১ লাখ ডোজ টিকা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার উপহার হিসেবে কোভ্যাক্সের আওতায় এখন পর্যন্ত মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে। এর আগে ১ লাখ ৬২০ ডোজ ফাইজারের টিকা কোভ্যাক্সের আওতায় উপহার হিসেবে পাঠানো হয়। জাপান থেকে ২৪ জুলাই আসে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২ লাখ ৪৫ হাজার ডোজ টিকা এসেছে উপহার হিসেবে।

ইত্তেফাক/এএএম