শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনা উপসর্গে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, আতঙ্কে শিক্ষার্থী-অভিভাবক 

আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:২২

মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

ওই শিক্ষার্থী মানিকগঞ্জ শহরের সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। এদিকে তার মৃত্যুর পর বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কাজী একেএম রাসেল বলেন, ‘একজন ছাত্রীর করোনা আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বুধবার রাতে ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাদের সন্তানদের করোনা পরীক্ষার করানোর জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন।’

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি এবং বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ থাকায় গত ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয় আসা বন্ধ করে দেয়। এরপর গত তিনদিন ধরে তার জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খায়। তবে গত শনিবার দুপুরের পর থেকে মারাত্মকভাবে শ্বাসকষ্ট, গলা ও বুকে ব্যথা হলে দ্রুত জেলা সদরের গিলন্ড এলাকায় মুন্নু জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখান থেকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। 

করোনা ছাড়লেও পিছু নিচ্ছে নানা জটিলতা

মুন্নু জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। সিটি স্ক্যানের পর ছাত্রীর ফুসফুসে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তার রক্তে অক্সিজেনে মাত্রাও খুবই কম ছিল। সংকটাপন্ন অবস্থা হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজধানীর কুর্মিটোলা বিশেষায়িত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তার করোনা উপসর্গ ছিলো।’ 

সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সরকারি বালিকা বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় গত শনিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ওই শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে তার ৫৮ জন সহপাঠীকে করোনা পরীক্ষা করোনো হয়েছিল। তবে কারও করোনা শনাক্ত না হওয়ায় এবং আক্রান্ত শিক্ষার্থী সুস্থ হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে ওই শ্রেণির পাঠদান চালু হয়েছে।’

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরজু খানম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী গত ১৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ স্কুলে এসেছিলো। তখন তার শরীরে কোন সমস্যা ছিল না। সে বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। বির্তক, আইসিটিসহ অনেক বিষয়ে সে পারদর্শী ছিলো। তার মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের সকলেই শোকাহত।’

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

ইত্তেফাক/এএএম