শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মামলা করাই হয় যাতে টাকা দিতে না হয় : প্রধান বিচারপতি

আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:০৯

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবিকৃত সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আপাতত কতটাকা দিতে পারবে তা জানাতে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনকে (জিপি) দুই সপ্তাহের সময় দিয়েছে আপিল বিভাগ।

 

জিপির আইনজীবীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

 

শুনানিকালে জিপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, এদেশে ব্যবসা করাটা সহজ। যখন টাকা-পয়সার ব্যাপার আসে তখন আদালতে এসে একটা আবেদন করে স্থগিতাদেশ নিয়ে টাকা দেওয়া হয় না। গড়িমসি করা হয়। মামলাগুলো করাই হয় যাতে টাকা দিতে না হয়। এসব মামলার কারণে অর্থঋণ আদালতগুলোতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা আটকে আছে।  ব্যবসা করবেন টাকা দেবেন না তা হয় না।

 

দাবিকৃত সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা প্রদানের জন্য ২ এপ্রিল জিপিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই চিঠির বিরুদ্ধে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করে ফোন কোম্পানিটি। এতে টাকা প্রদানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। গত ২৮ আগস্ট আদালত মামলা খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে জিপি। ওই আবেদন গ্রহণ করে বিটিআরসির চিঠি স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বিটিআরসি। গত ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগ এক আদেশে বলেন, জিপি এই মূহুর্তে কতটাকা বিটিআরসিকে দিতে পারবে তা জানাতে হবে।

 

সেই প্রেক্ষিতে এ মামলার শুনানিতে জিপির কৌসুলি এএম আমিনউদ্দিন বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে একশ কোটি টাকা দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই প্রেক্ষিতে ওই টাকা দিবো।

আরো পড়ুন : ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত শিশুদের মুক্তির নির্দেশ

আদালত বলেন, সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা পাবে, আর আপনি বলছেন একশ কোটি। ওইখানে কমপ্রোমাইজ করবেন আর আদালতে এসে মামলা করবেন সেটা হতে পারে না। আমিনউদ্দিন বলেন, তারা সিদ্ধান্ত না মানায় আদালতে এসেছি। টাকা দেব না একথা তো কখনো বলিনি।

 

আরেক আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বিটিআরসির দাবিকৃত টাকার ভিত্তি আছে কিনা সেটা আদালতের দেখা দরকার। একটা বহুজাতিক কোম্পানি এদেশে ব্যবসা করতে এসেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। এর আগে জিপি ২১ শত কোটি টাকা দিয়েছে।

 

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আদালতের নির্দেশে গ্রামীণফোন ওই টাকা দিয়েছে। আর অডিটের মাধ্যমে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার হিসাব এসেছে। গ্রামীণফোন তখনতো কোনো আপত্তি করেনি। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, কত টাকা দিতে পারবেন তা জানান, নইলে আদেশ দেওয়া হবে। এরপরই আদালত ১৪ নভেম্বর এ মামলার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

 

ইত্তেফাক/ইউবি