শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দুই মাসেই শেষ করতে হবে সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার তদন্ত

আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:২৫

দুই মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে বিআইডিএসের গবেষক সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার তদন্ত।তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এ সংক্রান্ত সময় আবেদন মঞ্জুর করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার এই নির্দেশ দেন। 

আদালত বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে এই মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। চারজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাহলে কেন সময় প্রয়োজন? রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, হাইকোর্টের লিখিত আদেশের অনুলিপি পেতে দেরি হওয়ায় তদন্তকারী সংস্থা আদালতের কাছে আরও দুই মাস সময় চেয়েছে। সময় পেলে তদন্ত দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে। এরপরই হাইকোর্ট ওই সময় মঞ্জুরের আদেশ দেয়। 

এদিকে, এই হত্যা মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্টো (দক্ষিণ) এর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন পিপিএম ইত্তেফাককে বলেন, উচ্চ আদালত আমাদের সময় মঞ্জুর করেছে। আমরা এই সময়ের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারব। 
প্রসঙ্গত ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে বড় মেয়ে সারাহাত সালমা চৌধুরীকে (৮) আনতে গিয়ে সিদ্ধেশ্বরীতে হত্যাকান্ডের শিকার হন সগিরা মোর্শেদ। সারাহাত তখন দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই হত্যা মামলায় ১৯৯১ সালের তৎকালীন ডিবি পুলিশ মিন্টু ওরফে মন্টু নামে এক আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে বলা হয়, ছিনতাইকারীর গুলিতে নিহত হন সগরিা মোর্শেদ। ওই মামলার বিচার চলাকালে মারুফ রেজা নামে এক ব্যক্তির নাম আসায় তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনে ২৮ বছর মামলার বিচারকাজ স্থগিত হয়। চলতি বছর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার স্থগিতাদেশ  প্রত্যাহার করে নিয়ে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশের পর পিবিআই ৫ মাস তদন্ত করে ৩১ বছর পর হত্যার রহস উম্মোচন করে। পিবিআই জানায়, ছিনতাই নয়, নিজ পরিবারের সদস্যদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটে খুনি দ্বারা সগিরা মোর্শেদকে হত্যা করা হয়েছিলো। পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নিহতের ভাসুর বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন খুনের পরিকল্পনা করেন। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় ডা. হাসানের পেশেন্ট মারুফ রেজাকে। ২৫ হাজার টাকায় খুনটি করতে তিনি রাজি হন। আর সগিরা মোর্শেদকে চিনিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় ডা. হাসানের শ্যালক আনাস মাহমুদকে। 

আরও পড়ুন: রাজধানী সুপার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

হত্যাকান্ডের দিন রাজারবাগের বাসার সামনে থেকে রিক্সায় থাকা সগিরা মোর্শেদের পিছু নেন মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ। ৬৪ সিদ্ধেশ্বরীতে পৌছার পরই মোটরসাইকেলে থাকা ওই দু’জন রিক্সার ব্যারিকেড দিয়ে তার হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি ধরে টানাটানি করেন মারুফ রেজা। তখন মারুফের সঙ্গে থাকা আনাসকে চিনে ফেলেন সগিরা মোর্শেদ। এরপরই হাতে থাকা চুড়ি ছেড়ে দিয়ে রিভলবার দিয়ে দুই রাউন্ড গুলি করেন মারুফ। তার গুলিতেই ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন সগিরা মোর্শেদ। ইতিমধ্যে পিবিআই এই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে খুনের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি দেওয়ার পরই তাদেরকে কারাগারে পাঠায় আদালত। 

ইত্তেফাক/কেকে