শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সাংবাদিক নাননুর মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আপডেট : ৩০ জুন ২০২০, ০৬:১৬

মাত্র সাড়ে পাঁচ মাসের ব্যবধানে একই বাসায় একইভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে জ্বলে-পুড়ে একমাত্র ছেলে পিয়াসের মতোই দৈনিক যুগান্তরের অপরাধ বিভাগের প্রধান বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন নাননুর মৃত্যুতে স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাননুর বড়ভাই মো. নজরুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে বাড্ডা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আসামিরা হলেন: নাননুর স্ত্রী শাহিনা হোসেন পল্লবী এবং শাশুড়ি মোসাম্মদ শান্তা পারভেজ।

বাড্ডা থানার ওসি মো. পারভেজ ইসলাম বলেন, সাংবাদিক নাননুর মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনে আগে গঠন করা গুলশান বিভাগ পুলিশের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, সিআইডি ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আলাদা আলাদা তদন্ত করছে। তার স্ত্রীর করা অস্বাভাবিক মৃত্যুর (ইউডি) সূত্র ধরে ঘটনার তদন্ত চলছিল। ঐ মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। এখন নতুন করে হত্যা মামলার তদন্ত করা হবে।

রাজধানীর বাড্ডার আফতাবনগরের তিন নম্বর সড়কের বি-ব্লকের ৪৪/৪৬ নম্বর বাসার দশম তলায় থাকতেন মোয়াজ্জেম হোসেন নাননু। গত ১২ জুন ভোরে সেখানে রহস্যজনক আগুনে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২ জানুয়ারি একই ঘরে অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে স্বপ্নীল আহমেদ পিয়াস।

হত্যা মামলার এজাহারে বাদী নজরুল ইসলাম বলেছেন, নাননু বাসায় ফেরার পর স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এর কিছু সময় পর বাসায় আগুন লাগে। এছাড়া নাননু একাই ছাদে গিয়ে পাইপ এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তার স্ত্রী ও শাশুড়ি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি। নাননু নিজেই দশম তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে নিচে নামেন। সেখান থেকে আশেপাশের ফ্ল্যাটের মালিকরা তাকে হাসপাতালে নেন। তার স্ত্রী অনেক পরে হাসপাতালে যান। এছাড়াও মামলার এজাহারে নাননুর স্ত্রী ‘ইনফিনিটি’ নামে যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সেটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল আমিনের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনার তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগ থাকায় আগেই ইনফিনিটির প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তখন তিনি নাননুর সঙ্গে তার পরিচয়, সম্পর্ক ও অন্যান্য বিষয়ে বিশদ বলেছেন। তবে সেখানে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তিনি নাননুকে যে স্যুপ খাওয়ান, সেখানে বিষ মেশানো ছিল বলে সন্দেহ করছেন কেউ কেউ। সেটি তদন্তের জন্য এরই মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিষক্রিয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ভিসেরা পরীক্ষার প্রয়োজন। তবে লাশের ময়নাতদন্ত না করায় তখন ভিসেরা নমুনাও সংগ্রহ করা হয়নি। এখন লাশ তুলে ময়নাতদন্ত করা হতে পারে।