যশোরের সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেনকে (২৩) পুলিশ কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। যুগ্ম জেলা জজের নিচে নয় এমন পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা দিয়ে ওই ঘটনা তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে যশোরের জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ (৬ জুলাই) সোমবার এই আদেশ দেন।
ডোপ টেস্টের রিপোর্টে ইমরান মাদকাসক্ত নয় বলে গতকাল হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছেন যশোরের সিভিল সার্জন। এর আগে আদালতে দাখিল করা পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, ওই যুবক মাদকাসক্ত। এরপরই হাইকোর্ট ডোপ টেস্টের নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশের পর সিভিল সার্জন এ প্রতিবেদন দেন।
শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ূন কবির পল্লব বলেন, দুটি রিপোর্টে ভিন্ন ভিন্ন মত এসেছে। এজন্য সঠিক চিত্র পেতে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি হওয়া দরকার। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়।
গত ৮ জুন যশোরের সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের নেছার আলীর ছেলে ইমরান হোসেনকে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অফিসার কর্তৃক নির্মম প্রহারের কারণে তার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠে । এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন ব্যারিস্টার হুমায়ূন কবির পল্লব। ওই রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই ঘটনায় পুলিশ ও সিভিল সার্জনের প্রতিবেদন তলব করে। এরপরই হাইকোর্টে প্রতিবেদন পাঠায় যশোর পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জন।
আরো পড়ুনঃ অসংক্রামক জটিল রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ
পুলিশের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইমরান পূর্ব থেকে নেশাগ্রস্থ ছিল। মাঝেমধ্যে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকত। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের কোন প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ নাই। তবে মাদকসহ দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চড়-থাপ্পরসহ ধস্তাধস্তি হয়ে থাকতে পারে।
মাদক পাওয়ার পর জব্দ তালিকা তৈরি না করে অনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে তাকে ছেড়ে দিয়ে তিন পুলিশ সদস্য পেশাদারিত্বের প্রতি চরম অবহেলা দেখিয়েছে। যা অসদাচরণের শামিল। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।
এছাড়া জেলার সিভিল সার্জনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইমরানের কিডনিতে সমস্যাসহ শারীরিক সমস্যা রয়েছে। এখন তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
ইত্তেফাক/এমএএম