বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আট বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেলো ধর্ষক

আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৫৩

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর ধর্ষণকারী নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দীন চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ আসামিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানার দুই লাখ টাকা আদায় করে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আদালতে ধর্ষণকারী নাঈম অনুপস্থিত ছিলো।  

দণ্ডিত নাঈম হাসান আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা। 

এদিকে ঘটনার সময় নির্যাতিত স্কুল ছাত্রী সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন। এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। 

দীর্ঘসময়ে পরে এসে আলোচিত এই ঘটনায় আদালতের রায়ে নির্যাতিত সেই ছাত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্তের আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিবউদ্দিন। 

মামলার বরাত দিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুস সেলিম ও অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ এ নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ছিলেন সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রী।  ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে তাকে অপহরণ করে ধর্ষক নাঈম হাসান।  

অপহরণের পর রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে যায়। পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা দেয়। 

এ ব্যাপারে ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে অপহরণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়াসহ যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতে থাকে।  

এছাড়াও জামিনে প্রতারণা আশ্রয়সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপণ করতে থাকে আসামি। 

এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত। 

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, দীর্ঘ সময়ে পরে হলেও আদালতের রায়ে দোষীদের চিহ্নিত করে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। 

মামলার বাদী জানান, ধর্ষণকারী ও তার পরিবার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর গত আট বছর তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের নানারকম হয়রানি সহ্য করতে হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। 

ইত্তেফাক/জেডএইচ