শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

উদীচী ট্র্যাজেডি দিবস আজ

২২ বছরেও শনাক্ত হয়নি ঘাতক

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২১, ০৭:০৭

যশোরের উদীচী ট্রাজেডি দিবস আজ। এদিকে, ২২ বছরেও শনাক্ত হয়নি ঘাতকরা। জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি। উচ্চ আদালতে আপিল শুনানিতে ঝুলে আছে মামলার বিচারকাজ। ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল ময়দানে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের অনুষ্ঠান বোমা হামলায় হতাহত হয় শতাধিক মানুষ।

নিহতরা হলেন নূর ইসলাম, নাজমুল হুদা তপন, সন্ধ্যা রানী ঘোষ, ইলিয়াস মুন্সী, শাহ আলম বাবুল, বাবুল সূত্রধর, শাহ আলম, বুলু, রতন রায় ও রামকৃষ্ণ। বিচারকাজ বিলম্বিত হওয়ায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘশ্বাস বাড়ছে।

পাবলিক প্রসিকিউটর এম ইদ্রীস আলী বলেন, উদীচী হত্যা মামলাটি উচ্চ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েক বছর ধরে অপেক্ষায় থাকলেও শুনানি হয়নি। আপিল শুনানি নিষ্পত্তি না হলে নিম্ন আদালতে বিচারকাজ শুরু সম্ভব নয়। ১৯৯৯ সালে উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলার ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা হয়। প্রথমে কোতোয়ালি পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করলেও পরে তা সিআইডির ওপর ন্যস্ত হয়। তদন্ত শেষে ঐ বছরের ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি।

পরবর্তী সময় চার্জ গঠনের সময় উচ্চ আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তরিকুল ইসলামকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলা আদালতে গড়ানোর সাত বছর পর ২০০৬ সালের ৩০ মে মামলার রায় প্রদান করেন আদালত। রায়ে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মামলার এমন রায়ে যশোরসহ সারা দেশের মানুষ বিস্মিত হন।

এদিকে, দেশের আলোচিত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান আটক হওয়ার পর পুলিশের কাছে প্রদত্ত জবানবন্দিতে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার কথা স্বীকার করে। এই জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে উদীচী হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মুফতি হান্নানের উদীচী হত্যাযজ্ঞ সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর জবানবন্দির পর উদীচী হত্যা মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এই মামলার রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়। পরে এই হত্যা মামলায় মুফতি হান্নানকে যশোরে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ২০১০ সালের ৮ জুন ঐ আপিল আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির পর আসামিদের বক্তব্য জানতে চেয়ে বিচারিক বেঞ্চ নোটিশ জারির আদেশ দেন।

হাইকোর্ট থেকে জারিকৃত এ সংক্রান্ত নথিপত্র ২০১০ সালের ২৬ জুলাই যশোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে খালাস পাওয়া আসামিরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। সিআইডির ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিটের কারণে ২০০৬ সালের ৩০ মে আদালত থেকে খালাস পেয়ে যায় এই মামলার সব আসামি। পরে সরকার ঐ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। কিন্তু এরপর মামলাটির আপিল শুনানি আর হয়নি। আটকে আছে আইনের বেড়াজালে।

এদিকে, উদীচী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষ্যে আজ শনিবার বিকালে টাউন হল ময়দানে প্রতিবাদী গান, আলোচনাসভা ও শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি