শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মেধাবীদের মূল্যায়ন না করলে তারা কেন এদেশে থাকবে: হাইকোর্ট

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৫১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই বিভাগের প্রভাষক পদে চাকরি প্রত্যাশী মো. এমদাদুল হকের আবেদন দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ভিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। আদালত বলেন, ‘শিক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য রিটকারী প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণ পদক পেয়েছেন। কিন্তু প্রভাষক নিয়োগের পরীক্ষায় তাকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। যদি এ ধরনের মেধাবীদের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করা না হয় তাহলে এরা কেন এদেশে থাকবে। তারা তো দেশের বাইরে চলে যাবে। অথচ প্রধানমন্ত্রী মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করছে না।’

আদালত বলেন, ‘এ ধরনের মেধাবীরা যদি দেশের বাইরে চলে যায় তাহলে অযোগ্য লোকের সংখ্যা বাড়বে। প্রশাসনের বিভিণ্ন জায়গায় যোগ্য লোক থাকলেও অযোগ্য লোকও রয়েছে।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্ট বলেছে দেশের নাগরিকরা যে কোন অবস্থানেই থাকুক না কেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অবশ্যই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ব্যাত্যয় ঘটলে শিথিলতা প্রদর্শনের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।’

এমদাদ চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় তিনি ৩ দশমিক ৮৮ সিজিপিএ পেয়ে বিভাগে প্রথম হন। মাস্টার্স পরীক্ষায় তার সিজিপিএ হয় ৩ দশমিক ৯৬। ওই ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক পান তিনি। গত ২৭ মার্চ চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পদে সাক্ষাতকার গ্রহনের জন্য দিন ধার্যছিলো। ওই সাক্ষাতকার দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে সাতজন শিক্ষার্থী তার ওপর হামলা করে। অর্থ দাবির পাশাপাশি দফায় দফায় তাকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বলা হয়, তিনি শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

বিষয়টি জানানোর পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাকে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনা জানতে পেরে ওসি দুঃখ প্রকাশ করে তাকে ছেড়ে দেন। এই ঘটনার পর ৩০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এমদাদুল হক। তাকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রভাষক পদে নেওয়া মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী জ্যের্তিময় বড়ুয়া ও রাষ্ট্রপক্ষে ডিএজি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার শুনানি করেন। 

আরও পড়ুনঃ গুরুদাসপুরে যুবলীগ নেতা কাটলেন বিদ্যালয়ের পাঁচটি গাছ

জ্যের্তিময় বড়ুয়া বলেন, রিটকারীর আবেদন নিষ্পত্তি করতে ভিসিকে নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে ওই বিভাগের প্রভাষকের দুটি শূণ্য পদে যেন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা না হয় সেই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।

ইত্তেফাক/নূহু