শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দোষ স্বীকারের সংস্কৃতি চালু হলে কমবে মামলা জট: প্রধান বিচারপতি

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০১৯, ২১:১৩

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‌‘আমাদের দেশে অপরাধ করে কেউ দোষ স্বীকার করে না। সবাই দাবি করে সে নির্দোষ। যার কারণে ৯০ ভাগ মামলাই বিচারের যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষিত হচ্ছি, মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে, এখন যদি এই দোষ স্বীকারের সংস্কৃতি চালু হয় তাহলে মামলা জট থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।’ 

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এই স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের বক্তব্যে মামলার বিচারের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি উঠে আসলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার অফিসে এফবিআইয়ের দু’জন লোক এসেছিলো। তারা আমাকে বলল, তোমাদের কত ভাগ ফৌজদারি মামলা ট্রায়ালে যায়। আমি বললাম ৯০ ভাগ মামলা ট্রায়ালে (বিচার) যায়। তারা বলল এটা তো অসম্ভব ব্যাপার। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে দশ লাখ লোকের জন্য একশত জন বিচারক আছেন। সেখানে ১০ থেকে ১৫ ভাগ মামলা বিচারের যায়। বাকি মামলা বিচারের যাওয়ার আগেই দোষ স্বীকার করে বাদী-বিবাদী আপস করে ফেলে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের এখানে ৯০ ভাগ মামলার ট্রায়াল হচ্ছে। ১০ ভাগ মামলা ট্রায়ালে যাচ্ছে না। আমাদের দেশে বিচারের যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটার পরিবর্তন না হলে ততদিন মামলার জট লেগেই থাকবে। দেওয়ানি বিচারের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রে একই অবস্থা। ট্রায়ালের যাওয়ার আগেই মামলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ট্রায়ালে মামলা গেলে মামলা পরিচালনার ব্যয় অনেক বেশি। এই প্রেক্ষাপট আমাদের দেশে কবে চালু হবে সেটা একটা প্রশ্ন।’
 
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতি দশ লাখ লোকের জন্য বিচারক আছেন ১০ জন। ভারতে ১৮ জন। ১৯৮২ সালে হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলা ছিলো ২৫ হাজার। এখন সেটা পৌঁছেছে ৫ লাখে। এটা কেন হয়েছে? কারণ মানুষ আগে এত সচেতন ছিলো না। দেশে আগের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষিতের হার বেড়েছে, বেড়েছে মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা। যেহেতু অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে সেহেতু ব্যাপকহারে মানুষ কোর্টে আসছে। এ কারণে মামলা জট বাড়ছে।  আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক, সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি যে সব মামলা ট্রায়ালে পাঠানো যাবে না। ট্রায়ালে যাওয়ার আগে প্রি-বার্গেনিংয়ের যে পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো চালু করতে হবে।’

আরও পড়ুন: আইসক্রিম কিনতে গিয়ে প্রাণ হারালো শিশু
 
অনুষ্ঠানে এলকপের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বলের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান খান প্রমুখ। 

ইত্তেফাক/কেকে