শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আপডেট : ২৭ মে ২০১৯, ১৮:৩৬

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সাইবার ট্রাইব্যুনাল। মামলার বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ সোমবার এ আদেশ দেয়া হয়। আগামী ১৭ জুন পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্তকারী কর্মকতাকে বলা হয়েছে।

 

যৌন হয়রানির শিকার নুসরাত রাফির বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচারের সত্যতা পাওয়ায় ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই। আজ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন জানায় মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

 

ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, গত ১৫ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রত্যাহার) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলা করা হয়।

 

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিকটিম নুসরাতকে ওসির কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার দুই বান্ধবী নাসরিন সুলতানা, নিশাত সুলতানা এবং সেনাগাজীর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা পাশের কক্ষে বসা ছিলেন। ভিকটিমের দুই বান্ধবীর বক্তব্য অনুযায়ী ভিডিও ধারণ করার পূর্বে ওসি মোয়াজ্জেম মুখের নেকাব খুলতে নুসরাতকে বাধ্য এবং দফায় দফায় বিব্রতকর প্রশ্ন করেন। আপত্তি জানালে ওসি তাকে আশ্বস্ত করে বলেন্ত এ ভিডিওটি সম্পর্কে কেউ জানবে না। যৌন নিপীড়নের শিকার একজন ভিকটিমের সঙ্গে ওসির এরকম অমানবিক আচরণ অপেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করে। ওসির এ পেশাগত অদক্ষ আচরণের ফলে রাফিকে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এবং পুলিশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মোয়াজ্জেম জানান, মোবাইলটি অফিসের টেবিলে রেখে অজু করতে যান। এ সময় তার অজ্ঞাতে একটি বেসরকারি টিভির ফেনী প্রতিনিধি (সাংবাদিক) শেয়ারইট অ্যাপসের মাধ্যমে নিজের মোবাইলে নিয়ে নেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে বলেছেন, ওসির এই বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। ওসি নিজেই স্বেচ্ছায় তার ব্যক্তিগত মোবাইল হতে ওই ভিডিও ক্লিপটি তার মোবাইলে পাঠায়। এছাড়া ওসির হোয়াটস অ্যাপ আইডি থেকে অন্য একটি আইডিতেও ভিডিওটি প্রেরণ করা হয়।

 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারার (অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার, ইত্যাদির দণ্ড) অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। নুসরাত অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর ওই ভিডিওটি প্রচার করায় তার বিরুদ্ধে ২৯ ধারার (মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার, ইত্যাদি) অপরাধ প্রমাণিত। এছাড়া ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার উপক্রম হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ৩১ ধারার (আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড) অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। প্রসঙ্গত ২৬ ধারায় ৫ বছর, ২৯ ধারায় তিন বছর এবং ৩১ ধারায় অপরাধের জন্য সাত বছর কারাদণ্ড, অর্থ দণ্ড এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

 

 

ইত্তেফাক/এএম