ব্যাভিচার সংক্রান্ত দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ধারাটি কেন সংশোধনের নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং লেজেসলেটিভ ও ড্রাফটিং বিভাগের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। রিটে বলা হয়, ওই ধারাটি সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে নারী ও পুরুষকে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। যা একজন নারীর জন্য অপমানজনক। এটা সংশোধন প্রয়োজন।
দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় ‘ব্যাভিচার’ এর বিষয়ে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অপর কোনো ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরূপ বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির সহিত উক্ত অপর ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ব্যাতীত এইরূপ যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষণের সামিল নহে, তবে সেই ব্যক্তি ব্যাভিচারের অপরাধের জন্য দোষী হবে। তাকে ৫ বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ডে, উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। অনুরুপ ক্ষেত্রে স্ত্রী লোকটি দুষ্কর্মের সহায়তাকারী হিসেবে দণ্ডিত হবে না।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন পাশে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও রিটকারী পক্ষে ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ইশরাত হাসান শুনানি করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করে।
ইশরাত হাসান ইত্তেফাককে বলেন, আইনের ওই বিধান অনুযায়ী যদি কারো স্বামী পরকীয়া করে তাহলে স্ত্রী স্বামী বা অন্য নারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন না। আবার স্ত্রী যদি পরকীয়া করে তাহলে স্বামীও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুযোগ নেই। তবে স্ত্রী যার সঙ্গে পরকীয়া করবে তার বিরুদ্ধে স্বামী মামলা করতে পারবে। অপরদিকে স্বামীর অনুমতি নিয়ে পরকীয়া করলে সেটা কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়বে না। ফলে কোনো স্বামী-স্ত্রী যদি বিবাহ বহির্ভতূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তাহলে এক্ষেত্রে একে অন্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো সুযোগ এই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় নেই।
ইত্তেফাক/কেকে