সারা পৃথিবী আজ কাঁদছে। সারা পৃথিবী আজ সংকট সমাধানের পথ খুঁজছে। চীন থেকে শুরু হয়ে ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলও আজ ধুঁকছে এই করোনা ভাইরাসের আক্রমণে। এই সময়ে সব খেলার তারকারাই যার যার সাধ্যমতো মানুষের দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফুটবলাররা প্রতিনিয়ত নানারকম প্রচারণা করে সতর্ক করছেন মানুষকে। এর চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে ফুটবল বিশ্বের অনেক তারকা আর্থিক বা শারীরিক অনুদান নিয়ে দাঁড়িয়েছেন এই করোনা ভাইরাসের বিপক্ষে যুদ্ধে।
বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অর্থ সাহায্য করে এই যুদ্ধে শরিক হয়েছেন লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, রবার্ট লেভান্ডোভস্কির মতো ফুটবলাররা। অর্থ সাহায্য করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। আরেক ভুবন বিখ্যাত কোচ হোসে মরিনহো মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার এবং তহবিল সংগ্রহ করছেন।
আর্জেন্টিনা ও স্পেনের দুটি হাসপাতালে ১০ লাখ ইউরো দান করেছেন লিওনেল মেসি। ইতিমধ্যে স্পেনের হসপিটাল ক্লিনিক নামের হাসপাতালটি টুইটার করে এই দানের খবর নিশ্চিত করেছে। এই হাসপাতালটি করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিত্সা দেয় এবং ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে।
আরও পড়ুন: ১৯ দিনের প্রচেষ্টায় করোনার ভ্যাকসিন তৈরি
লিওনেল মেসির সাবেক কোচ গার্দিওলাও ১০ লাখ ইউরো দান করেছেন। তিনি বার্সেলোনা ভিত্তিক একটি সংস্থাকে চিকিত্সা উপকরণ সরবরাহ ও ক্রয়ের জন্য দিয়েছেন এই অর্থ।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং তার এজেন্ট হোর্হে মেন্দেজও ১০ লাখ ইউরো দান করেছেন লিসবন ও পোর্তোর দুটি হাসপাতালে।
এর আগে বায়ার্ন মিউনিখের তারকা লেভান্ডোভস্কি ও তার স্ত্রী অ্যানা ১০ লাখ ইউরো দান করেন। এরপর লেভান্ডোভস্কি বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই একটা লড়াই করছি। এই লড়াইয়ে দুনিয়ার সব মানুষ আমরা এক দলের হয়ে খেলছি।’
মেসির দানের অর্থ পাওয়ার পর হসপিটাল ক্লিনিক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ক্লিনিকের কর্মীরা এই লড়াইয়ে নিবেদিত। আমরা এই সময়ে পাওয়া সকল দানের অর্থকে সম্মান জানাই। আমরা আমাদের সব লড়াই এই নতুন করোনা ভাইরাসের বিপক্ষে জারি রেখেছি। আমরা গবেষণা ও রোগীদের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছি। এটা একটা নজিরবিহীন সময়। এই দানের অর্থ হলো আমাদের অনির্দিষ্ট যে চাহিদা, সেটা কিছুটা হলেও পূরণ হওয়া।’
আরও পড়ুন: করোনা: ইতালিতে আজও ৬৮৩ জনের মৃত্যু
টটেনহ্যাম হটস্পারের পর্তুগিজ কোচ মরিনহোও এগিয়ে এসেছেন এই সংকটকালে। করোনা ভাইরাস সঙ্কটে নর্থ লন্ডনে ঘরে আটকে থাকা প্রবীণ বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন দুই বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী এই কোচ।
টটেনহ্যামের ট্রেনিং গ্রাউন্ডের কাছেই ‘এজ ইউকে’ ও ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ নামে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য কাজ করছে। তাদের হয়ে খাবার পার্সেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় রসদ প্রস্তুতের কাজে সহায়তা করেন মরিনহো।
রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই কোচকে ধন্যবাদ জানিয়ে গত সোমবার নিজেদের টুইটার পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ সংগঠনটি। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে আসার কারণ জানিয়ে মরিনহো বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি ‘এজ ইউকে’ এনফিল্ড ও ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ এনফিল্ডকে সাহায্য করতে। অবশ্যই আপনিও খাদ্য, অর্থ দিয়ে অথবা স্বেচ্ছাসেবী হয়ে সহায়তা করতে পারেন।’
ইত্তেফাক/বিএএফ