করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে একের পর এক সরকারি হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু সব সরকারি হাসপাতালকে কোভিড-১৯ করা হলে অন্য রোগীরা যাবে কোথায়? তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত করা হচ্ছে। রাজধানীর ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবা গতকাল মঙ্গলবার থেকে চালু হয়েছে। গতকালই তিন জন করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি হয়েছেন সেখানে।
ইত্তেফাকের এই প্রতিনিধি গতকাল হাসপাতালটি সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, অত্যাধুনিক আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সম্পূর্ণ পৃথক ভবনে ২০০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়েছে। বেডসহ অন্যান্য ব্যবস্থাও উচ্চ মানের। যেখানে পিসিআর, আইসিইউ, সিসিইউসহ করোনা চিকিৎসার যাবতীয় সরঞ্জাম ও অন্যান্য ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর। প্রতিটি বেডের সঙ্গে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। এর আগে রাজধানীতে করোনা রোগীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১০টি হাসপাতাল নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে তিনটি বেসরকারি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ইতিমধ্যে করোনা রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। শনিবার থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ তে রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে। ৫০২ বেডের এই ইউনিটে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এটা পূর্ণ হয়ে গেলে আর কোনো সরকারি হাসপাতাল রোগী ভর্তির জন্য প্রস্তুত নেই।
আনোয়ার খান ছাড়াও সর্বশেষ যুক্ত হওয়া আরো দুটি বেসরকারি হাসপাতাল হলো—হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ইমপালস হাসপাতাল। এই তিনটিতে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা আছে ৮৫০। আরো কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা উচিত জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, একের পর এক সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হলে হূদরোগী, কিডনি, গাইনি, ডায়াবেটিস, নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, জেনারেল সার্জারি, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহতসহ অসংক্রামক ব্যাধির রোগীদের নিয়ে বড়ো ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, আনোয়ার খান মর্ডান মেডিক্যাল কলেজে করোনা ইউনিট চালু একটি ভালো উদ্যোগ। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য প্রস্তুত করার উদ্যোগটি চমৎকার।
এদিকে, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার খান এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনাযুদ্ধে সরকারের পাশাপাশি আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর মনোভাব নিয়েই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা। তাদের কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের সম্পূর্ণ পৃথক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
ইত্তেফাক/এসি