শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিশ্ব মিডিয়ায় আফগানিস্তান-পাকিস্তান ম্যাচ ফিক্সিংয়ের খবর

আপডেট : ৩০ জুন ২০১৯, ১২:২১

বিশ্বকাপে শিরোপা দৌড়ে অনেক আগেই বাদ পড়েছে আফগানিস্তান। তাদের আর পাওয়ার কিছুই ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানের হারানোর অনেক কিছুই ছিল। এই অবস্থায় গতকাল মুখোমুখি হয় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। 

বারবার রঙ পাল্টানো এই ম্যাচে জয়ের পাল্লা কখনো আফগানিস্তানের দিকে ঝুঁকেছে আবার কখনো পাকিস্তানের দিকে। তবে আফগানিস্তানের জয়ের পাল্লাটাই ভারি ছিল বেশ। শেষে নাটকীয় এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সরফরাজের দল। কিন্তু, প্রশ্ন একটা রয়েই যায়। এই ম্যাচে কি কোনো অসামঞ্জস্য কিছু লক্ষ্য করা গেছে? আর সেই প্রশ্নেই কিক্রেটপ্রেমীরা অভিযোগ তুলেছেন। গুরুতর অভিযোগ। সেটা ম্যাচ ফিক্সিং বা পাতানো ম্যাচ। 

সেই অভিযোগের তীর এখন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবের দিকে। আর এ নিয়েও খবর প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও খেলা বিষয়ক ওয়েবসাইট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে বেশ প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।গুলবাদিন নাইবের কঠোর সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইসিসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাকে দল থেকে বহিষ্কারেরও দাবি উঠেছে।

ফক্স স্পোর্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব পাকিস্তানকে ম্যাচটি উপহার দিয়ে এসেছেন। প্রতিবেদনে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের পোস্টগুলোও তুলে ধরা হয়। দ্যা টেলিগ্রাফ একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে পাকিস্তানের জয়কে নাটকীয় জয় বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, আফগান স্পিনাররা যখন ম্যাচের লাগাম আফগানদের অনুকূলে নিয়ে আসেন, ঠিক তখন গুলবাদিন পাকিস্তানের ৪৬তম ওভারে বল করতে এসে ৬ বলে ১৮ রান দিয়ে মূলত পুরো ম্যাচটি জিততে পাকিস্তানকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেন! 

অন্যদিকে দলের মুজিবুর রহমান ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন, মোহাম্মাদ নবীও ১০ ওভারে ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন, রশিদ খান ১০ ওভারে ৫০ রানে ১ উইকেট পেয়েছেন এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৮ ওভার বল করে ৩২ রান দিয়েছেন। সেখানে গুলবাদিন নাকি ৯.৩ ওভার বল করে ৭৩ রান দিয়ে কোনো উইকেটই পাননি!

আবার পাকিস্তানের ইনিংসের ৫০তম ওভারে জয়ের জন্য যখন শেষ ৬ বলে ৬ রান দরকার, তখন গুলবাদিন একটি সহজ রান আউটের সুযোগও মিস করেন, যা থেকে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ২ রান সংগ্রহ করেন! ম্যাচের এমন মুহূর্তে একজন দায়িত্বশীল অধিনায়কের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-এর প্রধান সম্পাদক শেখর গুপ্ত টুইটারে লিখেন, আফগানিস্তানের উচিত তাদের অধিনায়ককে ছাঁটাই করা। দলকে জয়ের পথ তৈরি করে তিনি তারকা হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এত বাজে ও স্বার্থপর অধিনায়ক কখনো দেখিনি।

সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন পর্যন্ত গুলবাদিনকে এক হাত নিয়েছেন। তিনিও টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লেখার অযোগ্য ভাষায়।

এদিকে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরুর আগে আইসিসি ফিক্সিং রোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে। এ জন্য বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০ দলের প্রতিটির সঙ্গে একজন করে দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা রাখার ব্যবস্থা করে। কিন্তু ফিক্সিংয়ের অভিযোগ শেষপর্যন্ত চলেই আসে। আর সেটা আফগানিস্তান-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে। চলতি বিশ্বকাপে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছ থেকে পাওয়া এটাই প্রথম কোনো ফিক্সিংয়ের অভিযোগ। 

ইত্তেফাক/জেডএইচ