শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চার মাসে রপ্তানি কমেছে ৮ হাজার কোটি টাকা

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৩:২৪

গত বছর বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ে ভালো করলেও চলতি বছর এ খাতে সুখবর নেই। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাস জুলাই-অক্টোবরে রপ্তানি আয়ে বড়ো ছন্দপতন হয়েছে। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি কমে গেছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ডলারের রপ্তানি হলেও চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২ কোটি ডলারে। অর্থাত্ গত চার মাসে রপ্তানি কমেছে প্রায় ৯৩ কোটি ডলার যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় পৌনে আট হাজার কোটি টাকা।

এছাড়া আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১১ দমমিক ২১ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হাল নাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চার মাসের মধ্যে গত তিন মাস ধরে টানা রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে রপ্তানিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি কমেছে ১৭ শতাংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিন মাসেই রপ্তানি কমতির দিকে। জুলাইয়ে কিছুটা প্রবৃদ্ধি হলেও এর পর রপ্তানি আয় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে রপ্তানিকারকদের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগামী মাসগুলোয় এ পরিস্থিতির ইতিবাচক অগ্রগতি না হলে তা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ‘বুলবুল’

গার্মেন্টস শিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ইত্তেফাককে বলেন, অনেক মালিকেরই সক্ষমতার প্রায় অর্ধেকই অব্যবহূত থেকে যাচ্ছে। আমার নিজের কারখানায়ও একই অবস্থা। এটি শঙ্কা তৈরি করেছে। আগামী দিনেও রপ্তানি কমতির দিকে থাকবে। অথচ এই সময়ে রপ্তানি বাড়ার কথা। রপ্তানি কমার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে কিছু ক্রয়াদেশ স্থানান্তর হয়ে মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে নতুন মজুরি বাস্তবায়ন ছাড়াও গ্যাস-বিদ্যুতের দর বৃদ্ধির কারণে আমাদের উত্পাদন খরচ বেড়েছে। প্রতিযোগী দেশগুলোর স্থানীয় মুদ্রা ডলারের বিপরীতে দুর্বল হওয়ায় তারা আমাদের চেয়ে প্রতিযোগিতামূলক দরে অর্ডার নিতে পারছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী পোশাকের দরও কমতির দিকে। সব মিলিয়ে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ বেড়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রপ্তানির জন্য ডলারের আলাদা মূল্য নির্ধারণসহ সরকারের নীতি-সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। আলোচ্য সময়ে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ পণ্য। আগের অর্থবছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছিল ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছর প্রায় পৌণে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ডলারের। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিই ছিল। তবে এর পর থেকেই উলটো পথে হাঁটতে শুরু করেছে রপ্তানি।

ইত্তেফাক/ইউবি