শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পেঁয়াজ নিয়ে নৈরাজ্য

পাইকারিতে কমছে দাম খুচরায় প্রভাব নেই

আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৫২

কিছুটা হলেও ভোক্তাদের জন্য সুখবর এসেছে পেঁয়াজের পাইকারি বাজার থেকে। গতকাল রবিবার রাজধানীর সবচেয়ে বড়ো পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আমদানিকারকেরা বলেছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে দাম আরো কমবে। শুধু তা-ই নয়, দাম আরো কমার আশঙ্কায় ইতিমধ্যে পেঁয়াজ কেনা কমিয়ে দিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর শ্যামবাজারে খোঁজখবর নিয়ে এ তথ্য জানা যায়।


সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার কার্গো বিমানে করে মিসর থেকে এস আলম গ্রুপের পেঁয়াজের একটি বড়ো চালান আসছে। এছাড়া আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে পেঁয়াজ আনছে। এই খবরে নড়েচড়ে বসেছেন বড়ো বড়ো পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। অনেকেই খোঁজখবর নিচ্ছেন, কী পরিমাণ পেঁয়াজ আসছে কার্গো বিমানে করে, এতে বাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা বিচার-বিশ্লেষণ করছেন। অনেক ব্যবসায়ী তাদের হাতে থাকা পেঁয়াজের মজুত ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া ভোক্তারাও এখন দাম বাড়ায় হিসাব করে পেঁয়াজ কিনছে। আগে কেউ পাঁচ কেজি কিনলে এখন কিনছে ১-২ কেজি।বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাত্ করেই পেঁয়াজের ক্রেতা কমে গেছে। কম দামেও পেঁয়াজ কিনতে আগ্রহ নেই পাইকারদের। এই বাজারে পাইকারিতে গতকাল প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ মানভেদে ১৪০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়, যা এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কম।

শ্যমবাজারে পেঁয়াজের বড়ো আমদানিকারক নারায়ণ চন্দ্র রায় গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ‘কার্গো বিমানে পেঁয়াজ আসছে’—এই খবরে পেঁয়াজের বাজার এখন নিম্নমুখী। তিনি আরো বলেন, কাস্টমার কমে গেছে পেঁয়াজের। তাই ব্যবসায়ীদের মধ্যেও হতাশা চলে এসেছে। তিনি বলেন, লোকসান দিয়েও অনেকে পেঁয়াজ বিক্রি করতে চাইছেন, কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ হুজুগে চলে। এখন চারদিকে শোনা যাচ্ছে পেঁয়াজের দাম কমছে। তাই এখন আর পেঁয়াজ কিনছে না কেউ। তিনি বলেন, প্রতি বছর ডিসেম্বরের শুরুতে পুরোদমে নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে চলে আসে। এ বছর বন্যা ও বৃষ্টির কারণে কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে এখন আর পেঁয়াজের দাম বাড়বে না। এছাড়া নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজও বাজারে এসেছে।

আরও পড়ুন: ইডেনে ঘাসের উইকেট

তবে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়তে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বর্তমানে তারা বাজারে যে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তা আগের কেনা। কম দামে পেঁয়াজ কিনলে তারাও কম দামে বিক্রি করবেন। গতকাল শান্তিনগর বাজারে কেনাকাটা করতে আসা আসমা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামের পার্থক্য কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এটা কীভাবে সম্ভব? এ ধরনের নৈরাজ্য বন্ধ করা প্রয়োজন।

ইত্তেফাক/এএএম