শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ধান কেনায় দরিদ্র কৃষকদের বেছে নেওয়া হবে :কৃষিমন্ত্রী

আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:২১

ধান কেনার ক্ষেত্রে দরিদ্র কৃষকদের বেছে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, কৃষকদের মধ্যে লটারি হবে। ফলে রাজনৈতিক চাপের প্রশ্ন আসবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনের খাদ্য ও কৃষিপণ্যের প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি আমন মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকার ৬ লাখ টন ধান কিনবে। চালের দাম বাড়া বা কমা নিয়ে সরকার উভয় সংকটে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের চাল কেনার ঘোষণায় হয়তো ধানের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। এটা কৃষকের জন্য সুখবর। কিন্তু দাম কমলে সমালোচনার শিকার হতে হয়, আবার বাড়লেও সে দায় আমাদের ওপর চাপে।

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও চালের দাম বেড়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। গত এক সপ্তাহে মানসম্মত চালের দাম কেজিপ্রতি চার-পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। খাদ্যের উত্পাদন বাড়াতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে আমাদের প্রধান দুটি চ্যালেঞ্জ হলো কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা কৃষি ও খাদ্যপণ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। তবে এজন্য মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান বলেন, বাংলাদেশ এখন ১৪৪টি দেশে কৃষিপণ্য রফতানি করে। কৃষি খাতে যাতে কোনো কালিমা না লাগে। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান গবেষণা করে জানিয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি করা গুঁড়ো হলুদে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে, যা ব্যবহারে ক্যানসারও হতে পারে।

আরও পড়ুন: ইতালিতে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৫

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এদেশীয় প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসনও কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পণ্য তৈরির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি নিশ্চিত করা গেলে এ খাত আরো এগিয়ে যাবে।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বিশ্বদীপ দে বলেন, ভারত বাংলাদেশের কৃষি খাতের বড়ো একটি বাজার। বাংলাদেশ থেকে বিএসটিআই অনুমোদিত ২১ ধরনের কৃষিপণ্য ভারতে যায়।

প্রদর্শনী আয়োজক কমিটির প্রধান ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে কৃষিজাত পণ্যের রফতানি আয় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) মার্কিন ডলার। আগামী দুই বছরে এই আয় ১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হব।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জেইন মেরিন সুহ, এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এফ এইচ আনসারী, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) প্রেসিডেন্ট আ ফ ম ফখরুল ইসলাম মুনশি, বাপার জেনারেল সেক্রেটারি ইকতাদুল হক প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, বাপা আয়োজিত এ প্রদর্শনীর পাশাপাশি অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো এবং রাইস অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের ২৫টি দেশের খাদ্য উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আইসিসিবির চারটি হলে এ প্রদর্শনীতে প্রবেশে ফি লাগছে না। আগামীকাল শনিবার প্রদর্শনী শেষ হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসএইচএম