শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে ৯৫ হাজার প্রতিষ্ঠান

আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:৩২

দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও ভ্যাট নিবন্ধনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যাশিত সাড়া পাচ্ছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সর্বশেষ নিবন্ধনের জন্য বাড়ানো এক মাস সময় আগামী ৩০ নভেম্বর শেষ হচ্ছে। তা সত্ত্বেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের আওতায় আসেনি। এনবিআরের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ সংখ্যা গতকাল নাগাদ ৯৫ হাজার। আগামী কয়েকদিনে তা হয়তো এক লাখ ছাড়াতে পারে। যদিও অনলাইন ব্যবস্থায় তাত্ক্ষণিক ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়ার কার্যক্রম চালু হওয়ার পর নিবন্ধন ১ লাখ ৭২ হাজার হয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন ভ্যাট বিভাগের মাঠপর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বর সময়সীমা শেষ হওয়ার পর এই সুযোগ আর না বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন তারা। সেক্ষেত্রে নিবন্ধন ছাড়া আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, ব্যাংকিং কার্যক্রমসহ বেশকিছু ব্যবসায়িক কাজ আটকে যেতে পারে ব্যবসায়ীদের।

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সোমবার ইত্তেফাককে বলেন, এ পর্যন্ত ৯৫ হাজার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। আশা করছি, আগামী কয়েকদিনে বেশ কিছুসংখ্যক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নেবে। তবে তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বরের পর আর সময় না বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে। যাদের নিবন্ধন থাকবে না, তাদের আমদানি রপ্তানি একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে—তা নয়। তারা নতুন নিবন্ধন নিলেই কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। এজন্য খুব বেশি সময়ের দরকার হবে না।

জানা গেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়ার শেষ তারিখ—এমন একটি বক্তব্য সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করেছে এনবিআর। এর আগে এনবিআর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ব্যাংকগুলো কোনো ধরনের ঋণপত্র ইস্যু না করতে অনুরোধ জানিয়েছে। ফলে ৩০ নভেম্বরের পর সময় না বাড়লে আটকে যাবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। কোনো ধরনের দরপত্র কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। শুল্ক স্টেশনগুলোতেও ‘কালো তালিকাভুক্ত’ হয়ে যাবে। অর্থাত্ নিবন্ধন ছাড়া ব্যাবসায়িক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা কার্যত কঠিন হয়ে যাবে তাদের।

আরো পড়ুন: লন্ডনে উবারের লাইসেন্স বাতিল

সরকার গত জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করেছে। নতুন আইন অনুযায়ী, অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রতি মাসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এর আগে সক্ষমতা সত্ত্বেও অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের আওতায় আসেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতায় আনতে সরকার গত বাজেটে কিছু সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তা সত্ত্বেও নিবন্ধন সংক্রান্ত কিছু বিধিবিধানের জটিলতায় নতুন ব্যবস্থার নিবন্ধনে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। অবশ্য নতুন নিবন্ধনে কিছু জটিলতা ও বিড়ম্বনার কথা জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় ছিল আট লাখ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। যদিও এর মধ্যে মাত্র ৫০ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করত। তবে এনবিআর মনে করছে, দেশে অন্তত ৫ লাখ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনে সক্ষম। কিন্তু লেনদেন প্রক্রিয়া শৃঙ্খলায় না আসার সুযোগ নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই নিবন্ধনের আওতায় আসছে না।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, যারা এনবিআরের আয়কর কিংবা ভ্যাটের জালে (আওতায়) রয়েছেন, তাদের ওপরই সব ধরনের ‘চাপ’ দেওয়া হয়। এ কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভ্যাটের আওতায় আসার ক্ষেত্রে এক ধরনের ভীতি ও অনীহা রয়েছে।

ইত্তেফাক/বিএএফ