মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফের ঝুলে গেল সরল সুদ ও সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:২৮

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংক ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে আনা এবং সরল সুদ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পহেলা জানুয়ারি থেকেই সিঙ্গেল ডিজিট হবে এবং একই সঙ্গে সরল সুদ কার্যকর হবে। তার এই দৃঢ় ঘোষণার আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকও খসড়া নির্দেশনা তৈরি করে রেখেছিল।

গতকাল সোমবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ১ জানুয়ারির আগেই সার্কুলার জারি হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের হতাশ করে সিদ্ধান্ত এলো যে, এটি হচ্ছে না। ব্যাংক মালিকদের দাবির মুখে এই সময়সীমা আগামী ১ এপ্রিল ধার্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। গত সন্ধ্যায় এই খবর চাউর হওয়ার পর সবমহলেই হতাশা নেমে আসে। বহুল প্রত্যাশিত সরল সুদ কার্যকর হবার আশায় শিল্পউদ্যোক্তারা নতুন উদ্যমে কাজ শুরুর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকারদের দাবির মুখে আরো একবার সরকারকে পিছিয়ে যেতে হল।

সরল সুদ ও এক অংকের সুদ হার কার্যকর করা নিয়ে নানা মুখরোচক আলোচনা রয়েছে। বিষয়টি গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে আসছিল যে, সুদের হার কমানো হোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সুদের হার কমাতে নির্দেশ দেন। সেই আলোকে ২০১৭ সালে ব্যাংকার এবং ব্যাংক মালিকরা সুদের হার এক অংকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন এবং তা ২০১৮ সালের এক জুলাই থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দেন। ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর চেয়ারম্যান ও বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন। তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো সরকারের কাছ থেকে বেশ কিছু সুবিধা আদায় করে। সুবিধা নিয়েও তারা বাস্তবায়নে গড়িমসি করে। অবশেষে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও তারা কথা বলেন এবং গত ১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে জানান হয় যে, নতুন বছরে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট ও সরল সুদ কার্যকর হচ্ছে। বছর শেষের একদিন আগে এসে ব্যাংক মালিক ও এমডিদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি আবারও ঝুলে যায়। সময় চাইলে তারা আগামী ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকর করার সুযোগ পান। এই ঘোষণায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। বিষয়টি ঝুলে থাকায় সার্বিকভাবে ব্যবসা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।

এদিকে, বৈঠক শেষে গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী ১লা জানুয়ারি ২০২০ সাল থেকে আমানতে ৬ ও ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার চালু করার কথা ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কিছু নির্দেশনা এসেছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আজকে তাদের সাথে বৈঠক করেছি। এটি চালু করতে তারা আরো কিছু দিন সময় চেয়েছে। তবে সরকার আরো দুই মাস সময় দিতে চেয়েছে। তারা আরো এক মাস সময় বেশি চেয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী বছরের ১লা এপ্রিল থেকে এটি চালু করা যাবে।

ইত্তেফাক/আরকেজি