শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণা

'২০৩০ সাল নাগাদ দেশে বেকার হবে ৫৭ লাখ মানুষ'

আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৩১

বিশ্বব্যাপী চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিষয়টি এখন ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। মূলত চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে। রোবটিক্স, আর্টিফিয়াল ইন্টেলিজেন্স, বিগ ডাটা এবং এনালিটিক্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মতো ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ হবে বেশি। এর ফলে বিশ্বব্যাপী কর্মীর প্রয়োজন কমে যাবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক গবেষণার বরাত দিয়ে গতকাল ঢাকা চেম্বারের (ডিসিসিআই) অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) জানানো হয়, এই বিপ্লবের প্রভাবে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী ৮০ কোটি মানুষ বেকার হবে। এবং কেবল বাংলাদেশেই বেকার হবে ৫৭ লাখ মানুষ। তবে এই শিল্পবিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির বিপুল অগ্রগতির সুযোগও রয়েছে। এ সুবিধা সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হতে পারে। এ লক্ষ্যে সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগী করা, অবকাঠামো ও মানবসম্পদের দক্ষতা ও উন্নয়ন, শিল্প-শিক্ষার সমন্বয়ে জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ডিসিসিআই আয়োজিত ঐ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার। ‘কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব :বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ। এ সময় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, এ খাতের শিল্পোদ্যোক্তারা এ বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগী অধ্যাপক সাজিদ আমিত বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক খাতেও আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আমাদেরকে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তবে এর সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য দক্ষ মানবসম্পদের কোনো বিকল্প নেই তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা তৈরি ও বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, করোনার কারণে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যাবসায়িক কার্যক্রম ও সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি খুব স্বল্পসময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে, যদিও তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নয়। তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নতুন নতুন ব্যাবসায়িক কার্যক্রম সূচনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে উল্লেখ করে, এর মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে বলেও আশার কথা জানান তিনি। ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার বলেন, বাংলাদেশের জনগণের তথ্যপ্রযুক্তি গ্রহণের সক্ষমতা অত্যন্ত বেশি, যেটি কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রমাণিত হয়েছে। তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এভাবে বাড়তে থাকলে আগামীতে কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাড়াতে হতে পারে। তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শহরাঞ্চলগুলোতে ফাইভজি সুবিধা প্রদান করা যাবে এবং দেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো ফাইভজি সুবিধা প্রদান করা হবে।