শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

৮২ ভাগ পোশাকশ্রমিকের জীবিকায় প্রভাব ফেলেছে করোনা

আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:৪৭

গত মার্চ থেকে দেশব্যাপী শুরু হওয়া করোনা অন্যান্য খাতের মতো তৈরি পোশাক খাতের বেশির ভাগ শ্রমিকের জীবিকায় প্রভাব ফেলেছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও মাইক্রো ফাইন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ গার্মেন্টস শ্রমিকের জীবিকায় কমবেশি এর প্রভাব পড়েছে।

জরিপে অংশ নেওয়া বাদবাকি ১৮ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, করোনা তাদের জীবিকায় প্রভাব ফেলেনি। সানেম ও এমএফও গত ১৫ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের ওপর ধারাবাহিকভাবে জরিপ চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ এই জরিপটিতে ১ হাজার ২৬৯ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছেন। যদিও গার্মেন্টস খাতে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক।

জরিপে দেখা যায়, করোনার প্রভাবে নিজেদের কাছে থাকা সঞ্চয় ভেঙেছেন এক-চতুর্থাংশ শ্রমিক। এছাড়া খরচ চালাতে ধার করেছেন ১৮ শতাংশ শ্রমিক। আয় করতে কোয়ারেন্টাইন ভেঙেছেন ১৫ শতাংশ, বর্ধিত পরিবারের সাহায্যের ওপর নির্ভর করেছেন ৯ শতাংশ, কম খরচের বাসায় উঠেছেন ৪ শতাংশ, অন্য চাকরি খুঁজেছেন ৩ শতাংশ, বাড়ি ফিরে গেছেন ৩ শতাংশ এবং খরচ চালাতে সম্পত্তি বিক্রি করার কথাও জানিয়েছেন কোনো কোনো শ্রমিক।

এছাড়া জরিপে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে ৫১ শতাংশ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন। করোনার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসব শ্রমিকের ১৮ শতাংশ এখন আর পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারছেন না। ৫৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আগের চেয়ে কম পরিমাণে টাকা পাঠান। অন্যদিকে ২২ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, করোনার পরও তারা পরিবারের কাছে আগের নিয়মেই টাকা পাঠাচ্ছেন।

জরিপে দেখা যায়, গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের আয়ের যে অংশ গ্রামের বাড়িতে পাঠান, ঐ অর্থ কোথায় কী খাতে ব্যয় হবে—তা নিয়ন্ত্রণ করেন ৪২ শতাংশ শ্রমিক। আর বাদবাকি ৫৮ শতাংশ শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা তা নির্ধারণ করেন, শ্রমিকরা নন। জরিপে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের মধ্যে একটি বড় অংশ চাকরির জন্য তাদের জন্মস্থান থেকে অভিবাসন করেছেন।

সংখ্যায় কম হলেও, অনেক শ্রমিক একাধিকবার অভিবাসন বা জায়গা বদল করেছেন। জরিপে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত। অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ নারী। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৯ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা অন্তত একবার হলেও অভিবাসন করেছেন।