করোনার প্রভাবে গত ৬০ বছরের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে উন্নয়নশীল বিশ্ব। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) হিসেবে উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রবৃদ্ধি এ বছর শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হয়ে যাবে। তবে আশার দিক হলো আগামী বছর ২০২১ সালে বড় ধরনের উত্থান হবে। সে সময় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিও ৬ দশমিক ৮ শতাংশের প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের (এডিও) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ কথা জানায় সংস্থাটি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুর দিকে রপ্তানি বৃদ্ধি, রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতিসহ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিবাচক প্রবণতা থাকায় এই পূর্বাভাস দিল সংস্থাটি। প্রতিবেদন প্রসঙ্গে এক প্রেস বার্তায় সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ উল্লেখ করেন, মহামারি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পেতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য ও মহামারি পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকার উপযুক্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে। দরিদ্রদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে।
সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে এই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে আসা এবং খাদ্য পণ্যের দাম কম থাকায় এ বছর এশিয়ায় মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা যাবে। আগামী বছর অর্থাত্ ২০২১ সালে মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৩ শতাংশে থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৫ শতাংশের ঘরে থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের উদ্দীপনা ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশিত পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রধান ঝুঁকি হলো দীর্ঘমেয়াদি মহামারি ও বাংলাদেশের রপ্তানির গন্তব্য। অর্থাত্ করোনা মহামারির সময়কাল দীর্ঘায়িত হলে এবং বাংলাদেশের রপ্তানির বাজার সমস্যায় পড়লে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান ও দক্ষতার উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। মনমোহন প্রকাশ উল্লেখ করেছেন, আমরা রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের বৃদ্ধি দেখে আশাবাদী হচ্ছি। আশাকরি পুনরুদ্ধার টেকসই হবে যা প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে। শুরুর দিকে করোনার ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা এবং মহামারি ব্যবস্থাপনার ওপর অবিচ্ছিন্ন জোর এই পুনরুদ্ধারটি বজায় রাখতে সহায়তা করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত জুনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি। সরকারি সাময়িক হিসেবে প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।