বাজারে সরকারের কঠোর নজরদারিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগের ফলে পাইকারি বাজারে কিছুটা নরমভাব দেখা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামবাজার ও কাওরান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি দরে মানভেদে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। আগের মতোই চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বলেছেন, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর, দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলবন্দর ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের ভারতের সীমান্তে ব্যবসায়ীদের আগের এলসি করা যে ১২ থেকে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ আটকে আছে, তা যে কোনো মুহূর্তে ভারত ছেড়ে দিতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজের সমস্যার সমাধান হবে। ফলে পাইকারি বাজারে কিছুটা নরম ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
গতকাল কাওরান বাজারে আড়তে প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ৪৩০ টাকা। এই হিসেবে এক কেজির দাম পড়ে ৮৬ টাকা। আর আমদানি করা প্রতি পাল্লা পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। প্রতি কেজির দাম পড়ে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা। কিন্তু এক দিন আগেও দেশি পেঁয়াজের পাল্লা ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজের পাল্লা ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দর কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে আগের মতোই চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ মানভেদে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ প্রসঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজার থেকে বেশি দরে কেনা, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম কমলে আমরাও কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করব।
পেঁয়াজ আমদানিকারক মোরশেদুর রহমান গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, শুনছি ভারতের সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজ ছাড়া হবে। কিন্তু সেটা দ্রুত করা উচিত। কারণ, পেঁয়াজ তো পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই পেঁয়াজ দেশে ঢুকলে বাজার কিছুটা নরম হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো দেশে উত্পাদিত পেঁয়াজের ব্যাপক মজুত রয়েছে। এই পেঁয়াজ বাজারে আনতে পারলে ভোক্তাদের এত বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হবে না। উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে।
গতকালও রাজধানীতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সারা দেশে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে সরকারের এ বিপণন সংস্থাটি। আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত টিসিবির এ বিক্রি কার্যক্রম চলবে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে টিসিবি এবার সরাসরি বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বিক্রি করবে।
ইত্তেফাক/জেডএইচ