শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রিজার্ভ চুরির টাকা ফেরত পাওয়ার আশা কম

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:৩৩

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পাঁচ বছর পার হয়েছে। চুরি হওয়া অর্থের বেশির ভাগ এখনো উদ্ধার হয়নি। আর উদ্ধারের বিষয়ে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে তা কবে শেষ হবে কেউ জানে না। ফলে চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি এবং টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের আদালত ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউ ইয়র্কে মামলা দায়ের করেছিল। তবে তা গত বছরের মার্চে খারিজ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি), সোলায়ার রিসোর্ট ও ক্যাসিনো, মাইডাস রিসোর্ট ও ক্যাসিনো এবং অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। পরে স্টেট কোর্টে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অবশ্য সে মামলার শুনানি এখন পর্যন্ত শুরু-ই হয়নি। আর ফিলিপাইনের আদালতে ১২টি মামলা চলছে। সে দেশের আদালত চুরি হওয়া অর্থের বড় অংশ জব্দ রাখলেও মামলার অগ্রগতি তেমন নেই।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। অবশ্য এ ঘটনা প্রকাশ পায় মার্চ মাস। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা ও ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে। শ্রীলঙ্কায় যাওয়া অর্থ উত্তোলন করতে পারেনি সাইবার ক্রাইম চক্র। আর ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে ১৪ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। ঘটনার পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও বাকি টাকা এখনো উদ্ধার হয়নি।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্কালীন গভর্নর আতিউর রহমানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। দুজন ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে কমিটি করে সরকার। ঐ কমিটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্র প্রস্তুত রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই। যেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্বহীন ছিলেন। আর আন্তর্জাতিক লেনদেন নেটওয়ার্কের সঙ্গে স্থানীয় নেটওয়ার্ক যুক্ত করাই মূল অঘটনাটি ঘটেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলার পর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, মামলায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিযোগে বলা হয়, রিজাল ব্যাংকের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা এই অর্থ চুরির জন্য কয়েক বছর ধরে ‘বড় ধরনের’ ‘জটিল ষড়যন্ত্র’ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছিল, অজ্ঞাতনামা উত্তর কোরীয় হ্যাকাররা এই চুরিতে সহায়তা করেছেন। অর্থ চুরির পর তা নিউ ইয়র্ক সিটি ও ফিলিপাইনে আরসিবিসির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পরে এই অর্থের বেশির ভাগ ফিলিপাইনের ক্যাসিনোর মাধ্যমে পাচার হয়ে যায়।

কবে নাগাদ চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে? আদৌ ফেরত পাওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্ন করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, যেহেতু বিষয়টি ইন্টারন্যাশনাল আদালতে বিচারাধীন তাই আদালতের মাধ্যমেই এটা সমাধান করতে হবে।

ইত্তেফাক/এসআই