শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গভর্নরের সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ বিভ্রান্তিকর :এবিবি

আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৫০

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) একটি প্রতিনিধিদল গত ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিভ্রান্তিকর বলে দাবী করেছে সংগঠনটি। বুধবার এবিবির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) একটি প্রতিনিধিদল গত ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে বিভ্রান্তিকর শিরোনামের কিছু মনগড়া সংবাদের প্রতি এবিবির নজরে এসেছে। শিরোনামগুলির মধ্যে উদাহরণস্বরূপ রয়েছে: "বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ক্ষমা চাইলেন ছয় ব্যাংকের এমডি"; "কারণ ছাড়া ব্যাংকে কর্মী ছাঁটাই হয়নি— বৈঠকে এবিবির দাবি"; "ব্যাংকের কর্মী ছাঁটাই না করার নির্দেশ", ইত্যাদি।

ব্যাংকে কর্মীদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ, খারাপ পারফরমেন্সের কারণে পদত্যাগ এবং ব্যাংকের শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত কারণে পদত্যাগ বিষয়ে দেশের কয়েকটি ব্যাংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলমান নিরীক্ষা কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রধান পত্রিকায় অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছাপা হওয়ার প্রেক্ষিতে এবিবি নেতৃবৃন্দ এদিন গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে এ প্রসঙ্গে ব্যাংকগুলির অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এবিবি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান যে, শ্রম আইন যথাযথ পরিপালন করেই ব্যাংকে খারাপ পারফরমেন্স বা শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত কারণে কর্মীদের পদত্যাগ বা ছাঁটাই হয়ে থাকে। তারা আরও জানান, অনেক কর্মীই স্বেচ্ছায় বেশি বেতন ও সুবিধা নিয়ে অন্য ব্যাংকে যেমন চলে যান, তেমনই নানা পারিবারিক কারণ, স্থায়ীভাবে বিদেশ গমন ইত্যাদি কারণেও বড় সংখ্যক কর্মী স্বেচ্ছায় তাদের চাকরি ছাড়েন; আর যে সকল ব্যাংকে আলাদা কমিশন আয়ভিত্তিক সেলসফোর্স রয়েছে, সেসব ব্যাংকের পদত্যাগকারী কর্মীর সংখ্যা স্বাভাবিক কারণেই বেশি হয়, যেহেতু ব্যাংকের ভিন্নতার উপরে প্রশিক্ষিত সেলস কর্মীদেরকে স্থায়ী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। সভায় এবিবি চেয়ারম্যান বলেন যে, যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো ব্যাংক কোনো পদত্যাগকারী কর্মীর পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে গড়িমসি করে থাকে, তাহলে এবিবি সেটার নিন্দা জানায়।

এবিবি নেতৃবৃন্দের এ সকল তথ্য উপাত্ত ও পরিসংখ্যান শোনার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিছু ব্যাংকে নিরীক্ষা চলমান থাকার এবং তার শেষে বস্তুগত তথ্যের ভিত্তিতেই যে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটি ব্যাংক এমডিদেরকে নিশ্চিত করেন। গভর্নর তার বক্তব্যে করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে কর্মীদের পদত্যাগ ও ছাঁটাই বিষয়টির সংবেদনশীলতার দিকে দৃষ্টি রেখে ব্যাংক এমডিদেরকে মানবিক আচরণ প্রদর্শন করার আহ্বান জানান। তিনি ব্যাংকের প্রাথমিক স্তরের কর্মীদের কম বেতন প্রসঙ্গে ব্যাংক এমডিদেরকে উদারতা প্রদর্শন করারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন যে, চাকরি ছাড়া কর্মীর সংখ্যা মহামারীর আগের বছরগুলোর চাইতে বেশি হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।

পুরো সাক্ষাৎটি একটি পরিপূর্ণ সৌহার্দ্যসুলভ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এই সাক্ষাতে ব্যাংক এমডিদের ক্ষমা চাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি, অবস্থা ও কারণ তৈরিই হয়নি। প্রকাশিত সংবাদের এ অংশটুকু যেমন মনগড়া, তেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক মিটিংয়ে উপস্থিত ব্যাংকারদেরকে “ব্যাংকে অবৈধভাবে নিয়োগ বাণিজ্য চলে”, এমন কথা বলা হয়েছে দাবি করাটাও অপ-সাংবাদিকতা। সভায় ছয় ব্যাংক এমডির উপস্থিত থাকার কথাটিও একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করে একটি সুন্দর ও ইতিবাচক আলোচনার সংবাদকে বিকৃত করে সংবাদপত্রে ভুল তথ্যসহ উপস্থাপনের নিন্দা জানায় এবিবি।

ইত্তেফাক/আরকে